দেশের খবর
করোনা নিয়ে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর! হতে পারে কন্টেইনমেন্ট জোন, কমতে পারে লোকাল ট্রেন, বাড়ি থেকে কাজ ও স্কুল-কলেজ বন্ধের ভাবনা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সারা বিশ্বে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা এবং ওমিক্রন। সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতে ওমিক্রন এবং করোনা বৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী। বেশ কিছু রাজ্যে করোনা এবং ওমিক্রন সংক্রমণ রোখার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া শুরু হয়েছে।
এই রকমই বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা অতিমারীর জন্য প্রায় কুড়ি মাস স্কুল বন্ধ থাকার পর গত ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে স্কুল খোলা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, স্কুল খোলার পর স্কুলের শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসছে। ছাত্র-ছাত্রীরা করোনা আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যেও। ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকদের কথা চিন্তা করে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই গঙ্গাসাগর গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সাগরে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি।
সেখানেই রাজ্যে ক্রমবর্ধমান ওমিক্রন ও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তাই কলকাতায় ফের কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি স্কুল-কলেজ বন্ধ করা, লোকাল ট্রেনের সংখ্যা কমানো, অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ এবং বাড়ি থেকে কাজ করার বিষয়গুলি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাইরে থেকে আসা বিমানযাত্রীদের থেকেই রাজ্যে করোনার প্রকোপ ফের বাড়ছে বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী।
কাজেই আন্তর্জাতিক বিমানের ক্ষেত্রে ফের নিয়ন্ত্রণ আনা যায় কি না, তাও পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা করোনা আক্রান্ত হলে স্কুল বন্ধ রাখতে হবে। স্কুলে যথেষ্ট পরিমানে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রশাসনিক সমস্ত দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাইরে থেকে সবথেকে বেশি লোক আসে কলকাতায়। আর কলকাতা থেকে সবথেকে বেশি লোক বাইরে যায়। তাই কলকাতায় কিছু কন্টেইনমেন্ট জোন করা যায় কিনা, সেটা ভাবনা চিন্তা করে দেখতে হবে। আগামী ১ জানুয়ারি অনেকের অনেক ধরনের অনুষ্ঠান রয়েছে। ১ ও ২ তারিখ না করে যদি ৩ জানুয়ারি থেকে কোনও প্রোটোকল চালু করতে হয়, সেটা আপনারা দেখে নিন।
কলকাতা পুরসভার প্রত্যেকটা ওয়ার্ড ধরে ধরে সমীক্ষা করতে হবে। তারপর একটা রিভিউ করতে হবে। দরকার হলে ৫০ শতাংশ লোককে বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। যদি সংক্রমণ বাড়ে তা হলে কিছু দিনের জন্য আবার স্কুল-কলেজ বন্ধ করতে হবে। শিক্ষাসচিবকে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখে নিতে বলছি।’ ওমিক্রনে সংক্রমণ বেশি হলেও মুখ্যমন্ত্রী অযথা আতঙ্কিত হতেও বারণ করেছেন। সবাইকে কোভিড বিধি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গঙ্গাসাগর মেলার পর লোকাল ট্রেনের সংখ্যা কমানোরও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বুধবারের প্রশাসনিক বৈঠক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘সংক্রমণ বাড়ায় লোকাল ট্রেনেও প্রভাব পড়তে পারে। এখনই সব ট্রেন বন্ধ করা ঠিক হবে না। ট্রেনের সংখ্যা কমিয়ে দাও। প্রচুর মানুষ লোকাল ট্রেনের উপর নির্ভরশীল। রুজিরোজগার বন্ধ করা যাবে না। ট্রেনে মাস্ক পরে যাবেন। তবে ট্রেন এখনই কমানো যাবে না। গঙ্গাসাগর রয়েছে। বিধি মেনে যাঁরা যাবেন, তাঁরা যেতে পারবেন।
‘ বুধবার সাগরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী ২৭০ কোটি টাকার ৫৮ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও ৮৬৬ কোটি টাকার ২৯টি প্রকল্পের ঘোষণা করেন। এবং জয়নগরের মোয়ার হাব ও নলেন গুরের হাব করার পরিকল্পনার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া লবণাক্ত জমিতে স্বর্ণ ধানের চাষ ভালো হচ্ছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাই সেই ধান আরও বেশি উৎপাদনে জোর দিতে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।