টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করলেন মুখ্যমন্ত্রী! রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পেগাসাসর মাধ্যমে ফোন ট্যাপ করার বিস্ফোরক অভিযোগ
Connect with us

বাংলার খবর

টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করলেন মুখ্যমন্ত্রী! রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পেগাসাসর মাধ্যমে ফোন ট্যাপ করার বিস্ফোরক অভিযোগ

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্য এবং রাজ্যপালের দ্বন্দে নতুন মাত্রা যোগ হল। নির্বাচন পরবর্তী হিংসার পর থেকে রাজ্য এবং রাজ্যপাল দ্বন্দ চরম মাত্রা পায়। রাজ্যের প্রায় প্রত্যেক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন রাজ্যপাল। অথবা রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে কখনও সংবাদ মাধ্যমকে আবার কখনও সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করেছেন।

কখনও টুইটে নিজের ক্ষোভের কথা জানাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করেছেন। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করা বন্ধ হবে। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘আমি টুইটে রাজ্যপালকে ব্লক করেছি। আমি দুঃখিত এটি বলার জন্য। ব্লক করতে বাধ্য হয়েছি। এনাফ ইজ এনাফ। উনি কখনও সংবিধানকে অমান্য করে সরকারের বিভিন্ন আধিকারিককে ডেকে পাঠান এবং ভয় দেখান। রাজ্যসরকারে কাজের অনেক ফাইল দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখেন, সই করেন না। ফলে কাজের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ওঁর সঙ্গে গিয়ে আমি দেখা করেছি। কথা বলেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।

রাজ্যপালের উচিত সরকারের কাজের সহযোগিতা করা। কিন্তু উনি বিরোধী দলের মতো আচরন করছেন। এর জন্য আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। উনি প্রতিদিন একটি করে টুইট করেন। কখনও অফিসারদের গালাগালি দিয়ে, কখনও আমাকে গালিগালি দিয়ে। বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ তুলে, অসাংবিধানিক কথাবার্তা, অনৈতিক কথাবার্তা বলেন। আমাদের নির্দেশ দিতেন ওনার পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের চলতে হবে। পরামর্শ নয়, ওনার নির্দেশ অনুযায়ী চলতে বলতেন। তার মানে, আমরা ওনার চাকর-বাকর আর কি! আমরা কি বন্ডেড লেবার? আমরা নির্বাচিত সরকার হয়ে বন্ডেড লেবার! আর একটা কাউন্সিলরের কর্পোরট ইলেক্টেড না হয়েও, শুধুমাত্র নমিনেটেড হয়ে, তিনি হয়ে গিয়েছেন এখন সবার মাথার উপরে সুপার পাহাড়াদার।

Advertisement

আমি বাধ্য হয়েছি, আজকে আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ওনাকে ব্লক করে দিতে। কারণ, প্রতিদিন আমার বিরক্তি লাগত ওনার টুইটগুলি দেখে। যে কথাগুলি বলা উচিত নয়, যে কথাগুলি তিনি বলতেন, তা অমানবিক। এর জন্য আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আমার কিছু করার নেই। আমি অনেকদিন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি। চার বার চিঠি লিখেছি। বার বার বলেছি। প্রতিদিন অফিসারদের ডেকে পাঠাচ্ছেন। এটা উনি পারেন না। উনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে পারেন। সরাসরি যা ইচ্ছা করে যাচ্ছে আর সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। আমি শুনেছি, আদালত থেকে শুরু করে আয়কর, ইডি থেকে শুরু করে সিবিআই, কাস্টমস থেকে শুরু করে কলকাতা সিপি, ডিসি, মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব– সবাইকে ভয় দেখাচ্ছে। উনি নিজেকে কী ভাবেন! বাংলার মানুষ মাথা নত করে চলে না। হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির ফাইল, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের ফাইল আটকে রেখেছেন রাজ্যপাল।

আটকে রয়েছে হাওড়া-বালি বিল। বিল পাঠানোর পর আরও তথ্য জানতে চেয়েছিলেন। আমরা তা-ও পাঠিয়েছি। তার পরেও বিল পড়ে রয়েছে। বাম জমানায় যখন রাজ্যপাল ছিলেন ধর্মবীর, তখন তিনি কিছু ফাইলে সই করেননি। তা নিয়ে আন্দোলন হয়েছিল। শেষমেশ তাঁকে সরে যেতে হয়েছিল। আমরা তো দেড় বছর ধরে সহ্য করছি।’ এদিন মা ক্যান্টিন নিয়েও রাজ্যপালকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা পাড়ায় পাড়ায় মা ক্যান্টিন চালু করলে, ৫ টাকায় সাধারণ মানুষ ডিম-ভাত খেতে পেলে ওঁর সমস্যা হয়। উনি তার হিসাব চাইছেন। উনি প্রায়ই তাজ হোটেল থেকে খাবার আনান, তার বিল বার করব? রাজ্যপাল নিজেকে কী ভাবেন, সুপার পাহারাদারি রাজ্যপাল?’ রাজ্যপালের উস্কানিতেই বিজেপির গুন্ডারা রাজ্যে খুন-খারাবি করে বেড়াচ্ছে বলে দিন অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

শুধু তাই নয়, রাজভবন থেকেও পেগাসাসের মাধ্যমে ফোন ট্যাপ করা হয় বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যপালের উস্কানিতেই বিজেপির গুন্ডারা রাজ্যে লোক মারছে। নোয়াপাড়ায় আমাদের এক কর্মীকে খুন করা হয়েছে। এক জায়গায় বোমা মেরেছে। একজন মারা গিয়েছে, দুজন নিখোঁজ। পেগাসাস তো সারা ভারতে চলছে। এক অল ইন্ডিয়া পেগাসাস আর রাজ্যে নাভিশ্বাস। এই পেগাসাসের নাভিশ্বাস রাজভবনে বসে রয়েছেন। রাজভবন থেকে প্রতি মুহূর্তে প্রত্যেকের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। এর বেশি আমি আর কিছু বলব না। বাকিটা খুঁজে বার করার দায়িত্ব সাংবাদিকদের। রাজভবনটা ভালো করে খুঁজলে পেগাসাসের অনেক জিনিসপত্র এবং নথি পাওয়া যাবে।’

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.