বাংলার খবর
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: এসএসসি, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। এসএসসি-এর পাশাপাশি প্রাথমিকেও বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এবার এই বিতর্কের রেশ পড়ল বিধানসভার বাদল অধিবেশনও। সোমবার বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরে কী ভাবে চাকরি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই সমস্ত তথ্য তাঁর কাছে আছে বলেও এদিন রীতিমতো শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বিধানসভায় নূপুর শর্মার মন্তব্যের বিরুদ্ধে নাম না করে নিন্দা প্রস্তাব আনেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাবের সমর্থনে বক্তৃতা দিতে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এক লক্ষ চাকরি দিতে গিয়ে ১০০টা ভুল হবে। আমাকে সংশোধন করার সুযোগ দিতে হবে। না করলে জেলে পাঠাও। শিক্ষক পদে সাড়ে পাঁচ হাজার পোস্ট তৈরি করেছি। বেকারদের আমরা চাকরি দেব। তাতে যদি কোনও সমস্যা হয়, তা মিটিয়ে নিতে হবে।’ এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে নাম না করে ‘দাদামণি’ বলে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মন্দারমণির নাম এখন দাদামণি হয়ে গিয়েছে। কেন হয়েছে? দাদামণি চাকরি দিয়েছেন, তাঁর হিসেব কে নেবে? দাদামণি যাদের চাকরি দিয়েছিলেন, তাঁদের চাকরিও থাকবে তো? সিবিআই তাঁদের ধরবে না? মেদিনীপুর থেকে মুর্শিদাবাদ হয়ে উত্তর দিনাজপুর। সেই সব জায়গায় দাদামণি চাকরি দিয়েছেন। পুরুলিয়া জেলায় চাকরি দেননি, বঞ্চিত করেছিলেন ওঁদের। মেদিনীপুরের চাকরি কী ভাবে নিয়ে গিয়েছেন আমরা জানি। পুরুলিয়ার চাকরি কী ভাবে মেদিনীপুরে নিয়ে গিয়েছিলেন আমরা জানি। আমার বাড়িতে এসেছিলেন, চাকরি দিয়েছিলাম।’
শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে লাফাচ্ছে। তাহলে বিজেপির বিধায়ক ও সাংসদরাও ছাড় পাবেন না। দাদামণি ১৭ হাজার লোকের চাকরি খেয়ে নেবে বলেছে। ১৭ হাজার লোক চাকরি হারালে আপনাদের বাড়ির লোকও কি ছাড় যাবে? বলছে চাকরি খেয়ে নেবে। তাহলে ওইসব ছেলে-মেয়েদের ওঁর বাড়ি, বিজেপি বিধায়ক, নেতাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেব। ওদের বাড়ির সামনে গিয়ে ধর্নায় বসলে কী হবে? আমার নাম মুশকিল আসান। একটা ছেলে মেয়ের চাকরি খেতে দেব না। সিপিআইএম জমানাতেও তো অনেক বেআইনি চাকরি হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এসে সেই চাকরি খেয়ে নিতে পারতাম। কিন্তু সেটা আমরা করিনি। বলা হচ্ছে, ২০২৪-এ সব জিতে ক্ষমতায় আসবে আর সবাইকে জেলে ভরে দেবে। ক্ষমতা থাকলে দিক।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীও। সোমবার বিধানসভার বাইরে মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি একটা চাকরি তো দূরের কথা, একটা ব্ল্যাকবোর্ড নিয়েছি বলে প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান ভাঙছেন। আদালতের নির্দেশেই সিবিআই নেতা-মন্ত্রীদের ডাকছে। অবৈধভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলেই চাকরি যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে হুমকি দিয়েছেন।’