দশমীতে দুবাইয়ে বিসর্জন নাইটদের, চতুর্থবারের জন্য আইপিএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই
Connect with us

খেলা-ধূলা

দশমীতে দুবাইয়ে বিসর্জন নাইটদের, চতুর্থবারের জন্য আইপিএল চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ৯ বছর আগের পুনরাবৃত্তি হল না। শুক্রবার দুবাইয়ে ১৪তম আইপিএলের ফাইনালে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ২৭ রানে হারিয়ে ২০১০, ২০১১ ও ২০১৮ সালের পর চতুর্থ বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন হল চেন্নাই। ২০১২ সালে এই চেন্নাইকে হারিয়েই প্রথমবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। গত বছর এই ইউএই-তেই সাত নম্বরে শেষ করে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল চেন্নাই। এবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।

পুত্র আরিয়ানকে নিয়ে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা কেকেআরের অন্যতম কর্ণধার শাহরুখ খানের। দল ট্রফি জিতলে কিছুটা হলেও শান্তি পেতেন। কিন্তু সেই সুযোগে এবারের মতো আর পাওয়া হল না বলিউডের বাদশার। গত তিন ম্যাচে টসে জিতে রান তাড়া করে জিতেছিল কেকেআর। তাই শুক্রবারও টসে জিতে নাইট অধিনায়ক ওইন মর্গ্যানের মুখের হাসি চওড়া হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই ফিল্ডিং নিলেন তিনি। কিন্তু প্রতিদিন যে চমৎকার হয় না, সেটা বোধহয় ভুলে গিয়েছিলেন নাইট অধিনায়ক। আগের দু’টি ম্যাচে রান তাড়া করে জিতলেও কলকাতার দলটির ব্যাটিং বিশেষ করে মিডল অর্ডারের দৈন্যদশা প্রকট হয়ে উঠেছিল। শুক্রবার চেন্নাই সেটাকেই আরও একবার প্রমাণ করে দিল।

আগের দুই ম্যাচের ভুল থেকে যে নাইটরা কোনও শিক্ষাই যে নাইটরা নেয়নি, সেটাও পরিস্কার হয়ে গেল। ফলে, তৃতীয় বারের মতো ট্রফি ঘরে তোলা হল না কেকেআর-এর। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুরন্ত শুরু করেছিল চেন্নাইয়। চলতি আইপিএল-এর সব থেকে সফল দুই ব্যাটসম্যান যে তাদেরই। সর্বাধিক রানের তালিকায় দু’রানের ব্যবধানে প্রথম দু’টি জায়গা দখল করে বসে রয়েছেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার ঋতুরাজ গায়কোয়াড় এবং ম্যাচের সেরা ফাফ ডু’প্লেসি। শুক্রবার প্রথম জনকে ছাপিয়ে গেলেন দ্বিতীয় জন। দুবাইয়ের পিচ ব্যাটিং সহায়ক। সেই ফায়দা তুলে প্রথম থেকেই কলকাতার বোলারদের উপরে চড়াও হয়েছিলেন দু’জনে। শিবম মাভি, লকি ফার্গুসন, শাকিব আল-হাসান, বরুণ চক্রবর্তী কেউই রক্ষা পাননি। ওপেনিং পার্টনারশিপে ৬১ রান ওঠার পর ঋতুরাজকে (৩২) ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দেন সুনীল নারিন। তবে ম্যাচের শুরুতেই ২ রানে ব্যাট করা ডু’প্লেসিকে স্টাম্পের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন দীনেশ কার্তিক।

Advertisement

সেই সুযোগ নষ্টের পরিণাম হাড়ে হাড়ে টের পেল নাইটরা। এক বার প্রাণ ফিরে পেয়ে আর ভুল করেননি। বাকি ম্যাচে নাইট বোলারদের উপরে রীতিমতো বুলডোজার চালালেন তিনি। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকলেন এবং একেবারে শেষ বলে আউট হলেন। তাঁকে ফেরালেন শিবম মাভি। ৫৯ বলে ৭ বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৮৬ রান করে কলকাতার হাত থেকে একাই ম্যাচ ও ট্রফি কেড়ে নিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রাক্তন ব্যাটসম্যান। তারই দৌলতে ২০ ওভারের ৩ উইকেটে ১৯২ রান তুলল চেন্নাই। মাঝে রবীন উথাপ্পা তাঁর প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ১৫ বলে ৩ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ঝোড়ো ৩১ রানের ইনিংস খেলে নারিনের শিকার হয়ে ফিরলেন। শেষে মঈন আলিও ২০ বলে জোড়া বাউন্ডারি ও তিন ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৭ রান করে অপরাজিত থেকে যান। ২০১২ সালের ফাইনালে ১৯০ করেছিল চেন্নাই।

সেবার এই রান তাড়া করেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কেকেআর। এবার আর হল না। অথচ শুরুটা দেখে এক বারও মনে হয়নি কলকাতার শেষটা এরকম হতে চলেছে। ফাইনালের মতো এত বড় মঞ্চে কলকাতার দুই রাইজিংস্টার তথা ওপেনার শুভমন গিল ও বেঙ্কটেশ আইয়ার। দু’জনেই নিজেদের সেরাটাই বের করে এনেছিলেন। দু’জনেই হাফ সেঞ্চুরি করলেন। কিন্তু কলকাতার মিডল অর্ডার শুক্রবারও আত্মসমর্পণ করল। দুই ওপেনার ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারলেন না। দুবাইয়ের পিচে বড় রান রান তাড়া না করার মতো পরিস্থিতি একেবারেই ছিল না। কিন্তু মর্গ্যানের দলের ব্যাটসম্যানদের ভুল থেকে শিক্ষা না নেওয়ার মনোভাব আরও একবার ডোবাল। গত ম্যাচের পর এই ম্যাচেও ৩২ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫০ রান করলেন আইয়ার। একাদশ ওভারে শারদুল ঠাকুরের কাছে পরাস্ত হয়ে আবার যখন ফিরলাম তখন নাইটদের রান ৯১। ব্যাস সেই শুরু। নব্বইয়ে এক থেকে ১২৫ রানে আট উইকেট হতে বেশি সময় লাগেনি।

৩৪ রানের মধ্যে সাত উইকেট পড়ে যায় নাইটদের। নিতিশ রানা (০), সুনীল নারিন (২), দীনেশ কার্তিক (৯), সাকিব-আল-হাসান (০), রাহুল ত্রিপাঠী (২), মর্গ্যান (৪) যেন ক্ষণিকের অতিথি হয়ে সাজঘরে ফেরার শোভাযাত্রায় মেতে রইলেন। শুভমন গিলও ৪৩ বলে হাফ ডজন বাউন্ডারির সাহায্যে ৫১ রান করে ফিরলেন। শেষে লকি ফার্গুসন (১৮ নঃআঃ) ও শিবম মাভি (২০) কিছু রান করায় হারের ব্যবধান কিছুটা কমায় কেকেআর। ৯ উইকেটে ১৬৫ রানেই শেষ হয়ে যায় নাইটদের ইনিংস। চেন্নাইয়ের হয়ে শার্দুল ঠাকুর তিনটি এবং রবীন্দ্র জাদেজা ও হ্যাজেলউড দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন। একটি উইকেট পেয়েছেন দীপক চাহার। কেরিয়ারের ৩০০তম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে চেন্নাইকে চতুর্থবারের জন্য চ্যাম্পিয়ন করেই মাঠ ছাড়লেন ধোনি। এবারের আইপিএলে ১৬ ইনিংসে ৬৩৫ রান করে সবথেকে কম বয়সে অরেঞ্জ ক্যাপ জেতার নজির গড়লেন চেন্নাইয়ের ওপেনার ঋতুরাজ। অপরদিকে, ১৫ ম্যাচে রেকর্ড ৩২ উইকেট নিয়ে বেগুনি টুপি জিতেছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হর্ষল প্যাটেল।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.