রাজনীতি
নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় শেখ সুফিয়ানের জামাই-সহ ১১ তৃণমূলকর্মীকে গ্রেফতার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ:নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতির খুনের ঘটনায় শনিবার নন্দীগ্রাম থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় এই প্রথম একসঙ্গে এতজন গ্রেফতার হল। ধৃত ১১ জনের মধ্যে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের জামাইও রয়েছেন। এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সুফিয়ানকেও জেরা করেছিল সিবিআই। কিন্তু হলদিয়া মহকুমা আদালতে সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছে তাতে শেখ সুফিয়ানের নাম নেই।
তবে সুফিয়ানের জামাই তথা মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শেখ হাবিবুলকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এছাড়াও শেখ সাহাউদ্দিন, শেখ বাইতুল ইসলাম, শেখ মুখতার রহমান, শেখ মহিদুল ইসলাম, হায়াতুল ইসলাম শেখ, শেখ আতুল রহমান, শেখ মুখতাদির, শেখ মুস্তাক রহমান, আব্দুল হাই শেখ এবং শেখ নাজিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই রাজ্যের শাসকদলের নেতা ও কর্মী। শেখ সাহাউদ্দিন কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। শেখ বাইতুল ইসলাম নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। শনিবার হলদিয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ১১ জনকে ডেকে পাঠায় সিবিআই। প্রথমে তাঁদের আটক করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর তাঁদের গ্রেফতার করে হলদিয়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। গত ২ মে রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর নন্দীগ্রামের কেন্দামারি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূল কর্মীরা ব্যাপক তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।
নিজের বাড়িতে হামলা আটকাতে গিয়েই গুরুতর জখম হন চিল্লোগ্রামের বাসিন্দা দেবব্রত মাইতি। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। তারপরই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে গত ৩০ আগস্ট সিবিআই একটি মামলা দায়ের করে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে থাকার সন্দেহে সুফিয়ান-সহ অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তারপরই গত ৫ অক্টোবর হলদিয়া মহকুমা আদালতে চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই চার্জশিটে তিনজনের নাম ছিল। শনিবার হঠাৎ করেই এই ১১ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ইতিমধ্যেই এই মামলায় এক অভিযুক্ত জেল হেফাজতে রয়েছেন এবং দু’জন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। শনিবারের গ্রেফতারের ঘটনায় ইতিমধ্যেই নন্দীগ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযুক্তদের আইনজীবী বিমল কুমার মাজি জানিয়েছেন, ধৃত ১১ জনকে এর আগেও তিনবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিবারই তাঁরা হাজিরা দিয়েছিলেন। চার্জশিটে নাম না থাকা সত্ত্বেও সিবিআই-এর এই ১১ জনকে গ্রেফতারের ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই অভিযোগ করেছেন অভিযুক্তদের আইনজীবী।