বাংলার খবর
ভিডিও কলে স্ত্রীর চোখে চোখ, কান্নায় ভেঙে পড়লেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ

২১ দিন ধরে শত্রুপক্ষের মাটিতে অজানা অনিশ্চয়তায় কাটিয়ে অবশেষে ফিরে এসেছেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ। পাকিস্তানে আটক থাকার পর মুক্ত হয়ে প্রথমবার স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে দেখা হতেই আবেগের বাঁধ ভেঙে পড়ে। কথা বলার বদলে কেবল কান্নায় ভেসে যান তিনি। এতদিন বুকের মধ্যে জমে থাকা উদ্বেগ, ভয় আর অপেক্ষা একসঙ্গে উপচে পড়ে চোখের জলে।
হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণমের পরিবারে তখন উচ্ছ্বাস আর অশ্রু মিলেমিশে একাকার। সকাল ৯টা নাগাদ যখন তাঁর মুক্তির খবর আসে, তখন থেকেই স্ত্রীর চোখ ফোনের স্ক্রিনে। বারবার ফোন আসছে, কিন্তু আসল ফোনটার জন্য অপেক্ষা। অবশেষে দুপুরে এক অচেনা নম্বর থেকে আসে ভিডিও কল।
আরও পড়ুন – উন্নয়ন আটকে দিয়েছিল বিজেপি, তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিস্ফোরক বার্লা
কল ধরতেই স্ক্রিনে স্বামীর মুখ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রজনী। পূর্ণম শান্ত গলায় বলেন, “আমি মুক্ত হয়েছি, ভালো আছি। চিন্তা কোরো না, আমি খুব শিগগিরই ফিরব।” তবে এরপর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। চোখের জল গড়িয়ে পড়ে, ভারী হয়ে আসে গলা।
রজনী জানান, তাঁর শরীর এখন ভালই আছে। পাশে ছিল তাঁদের আট বছরের ছেলে আরব, যিনি বাবার মুখে দাড়ি দেখে কিছুটা অপ্রস্তুত হলেও বলেন, “তুমি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে এসো। আমাদের কিছু ভালো লাগছে না।” পূর্ণম তাঁকে আশ্বস্ত করেন, “মেডিক্যাল করিয়েই ফিরব। চিন্তা কোরো না।”
আশ্চর্য হলেও সত্যি, এই পুরো সময়ে রজনীর সঙ্গে পূর্ণমের বন্দিদশার অভিজ্ঞতা নিয়ে বিশেষ কোনো কথা হয়নি। পাক সেনাদের ব্যবহার, খাওয়া-দাওয়া, নিরাপত্তা— এসব কিছুই ছিল অনুচ্চারিত। পরিবার কেবল অপেক্ষায়, কবে ফিরবেন পূর্ণম।
রজনীর গলায় কৃতজ্ঞতা। বলেন, “মোদীজি হ্যায় তো সব মুমকিন হ্যায়। আমার সিঁথির সিঁদুর রক্ষা করেছেন উনিই। মুখ্যমন্ত্রী দিদিও আমাদের পাশে ছিলেন, নিজে ফোন করেছিলেন। এমন সাপোর্ট কোনোদিন ভুলব না।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি, পূর্ণম বাড়ি ফিরলে তিনি নিজে রিষড়ায় যাবেন। সেই অপেক্ষাতেই দিন গুনছে পরিবার।
তবে সব শেষে এক প্রশ্ন — পূর্ণম কি আবার সীমান্তে যাবেন? রজনীর সাফ জবাব, “কেন যাবে না? দেশের সীমান্ত রক্ষা করা ওর কর্তব্য। আবার যাবে। গর্ব করেই যাবে