বাংলার খবর
ভবানীপুরের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার গুজরাতি দম্পতির রক্তাক্ত দেহ

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: শহরে আবার রহস্য মৃত্যু। ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ৭৩এ হরিশ মুখার্জী রোডের এক ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল এক গুজরাতি দম্পতির রক্তাক্ত দেহ। মৃত ওই দম্পতির নাম অশোক সাহু (৬০) ও রশ্মিতা সাহু (৫৫)। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছান ভবানীপুর থানার পুলিশ, স্থানীয় কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও গুলির চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশ কুকুরও নিয়ে আসা হয়। স্নিফার ডগ ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে গন্ধ অনুসরণ করে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে হরিশ পার্কের দিকে যায়। খুন করার পর আততায়ীরা পায়ে হেঁটেই পালিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী দল। ঘটনাস্থলে পৌঁছান কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠী, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও এসটিএফ। আততায়ীদের হদিশ পেতে রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই দম্পতিকে খুন করা হয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকাল থেকেই ছোটো মেয়ে বার বার ফোন করেও কোনও উত্তর পাননি ওই দম্পতির। তারপরই তিনি সন্ধে ৬টা নাগাদ বাড়িতে ফিরে দেখেন বাড়ির দরজা খোলা। ঘরের ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তাঁর বাব-মা। দরজার সামনে পড়েছিল মহিলার দেহ এবং শোওয়ার ঘরে পড়ে ছিল গৃহকর্তার দেহ। ঘরের আলমারি খোলা ছিল, টিভি চলছিল। খাবার প্লেট, খবরের কাগজ-সহ ঘরের জিনিসপত্র ওলটপালট ছিল। তারপরই তিনি প্রতিবেশীদের খবর দেন। মৃতদের পরনে থাকা কিছু গহনাও খোওয়া গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। মৃত দম্পতির মেয়ের অনুমান, বাড়িতে ডাকাতি করেতে আসায় বাধা দেওয়াতেই খুন করা হয়েছে তাঁর বাবা-মা কে। আবার কিছু প্রতিবেশীদের দাবি, গুলির শব্দও পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন অশোক সাহু। তাঁদের শেয়ার মার্কেটের ব্যবসা ছিল। তাঁদের তিন মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট মেয়ে খেলার অনুশীলন করতে গিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেই বাবা-মাকে মৃত অবস্থায় দেখেন। গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কাছেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি হওয়ায় গোটা এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট আটোসাঁটো। তার মধ্যেই হাড়হিম করা এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেই জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সম্ভবত গুলি করা হয়েছে। ময়না তদন্ত হলেই সব বোঝা যাবে। অপরাধ করে কেউ পালিয়ে যেতে পারবে না। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের পরেই কলকাতা পুলিশ। অপরাধী গ্রেফতার হবেই।’