প্রয়াত হলেন দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত
Connect with us

দেশের খবর

প্রয়াত হলেন দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: আশঙ্কাই সত্যি হল। প্রয়াত হলেন ভারতের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) তথা প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়ত। বুধবার দুপুর ১২.৪০ নাগাদ তামিলনাড়ুর কুন্নুরে নীলগিরি পার্বত্য অঞ্চলের জঙ্গলে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেনার এমআই- ১৭ ভি৫ হেলিকপ্টার।

সেই কপ্টারেই ছিলেন সস্ত্রীক বিপিন রাওয়াত এবং আরও কয়েকজন সেনা আধিকারিক সহ মোট ১৪ জন। এই দুর্ঘটনায় মৃত ১৩ জনের মধ্যে রয়েছেন বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত। সুলুর সেনাঘাঁটি থেকে ওয়েলিংটন সেনাঘাঁটির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল হেলিকপ্টারটি। ওয়েলিংটন কলেজে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল রাওয়াতের। কিন্তু তার আগেই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন তিনি। উড়ন্ত অবস্থাতেই হেলিকপ্টারটিতে আগুন ধরে যায় এবং পাহাড়ে আছড়ে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১১ জন সেনা আধিকারিকের। রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রী এবং এক অফিসারকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওয়েলিংটন ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানেই সন্ধ্যে নাগাদ তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। ঘটনার খবর পেয়েই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থামিয়ে বিপিন রাওয়াতের দিল্লির বাসভবনে গিয়ে তাঁর পরিজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই রাওয়তের সরকারি বাসভবনে ঢুকতে দেখা যায় সেনা প্রধানকে। তাঁর বাড়ির নিরাপত্তাও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপরই সন্ধ্যে ছটা নাগাদ এলো সেই দুঃসংবাদ। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দিমাপুরে একইভাবে কপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ছিলেন রাওয়াত। কিন্তু সেবার তিনি প্রাণে বেঁচে ফিরল এবার আর পারলেন না। ১৯৫৮ সালের ১৬ মার্চ উত্তরাখণ্ডের পৌড়ীর এক গঢ়ওয়ালি রাজপুত পরিবারের জন্ম বিপিন লক্ষ্মণ সিং রাওয়াতের। তাঁর পরিবারে সেনাবাহিনীতে যোগদানের ইতিহাস পুরুষানুক্রমিক।

Advertisement

বাবা লক্ষ্মণ সিং রাওয়ত ছিলেন ভারতীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল। শিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে তিনি পুণের খড়কভাসলার ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে যান। এর পর দেহরাদূনে ইন্ডিয়ান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিয়ে ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে যোগ দেন সেনার ১১ গোর্খা রাইফেলস ব্যাটালিয়নে। সোপোরে সন্ত্রাসদমন অভিযান, রজৌরিতে পাক হামলা প্রতিরোধ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। পেয়েছেন উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল, পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল-সহ একাধিক সেনা সম্মান। দীর্ঘ এই কর্মজীবনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধানের দায়িত্ব পান তিনি। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সহকারি সেনা প্রধানের দায়িত্ব নেন। তার দু’মাসের মধ্যেই সেনাপ্রধান হন।

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্থলসেনা প্রধানের পদে থেকেই অবসর নেওয়ার কথা ছিল রাওয়তের। তাঁর এক দিন আগে দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক পদে তাঁকে নিযুক্ত করে নরেন্দ্র মোদি সরকার। স্বাধীন ভারতের সামরিক ইতিহাসে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার (স্থল, বায়ু ও নৌ) সর্বাধিনায়ক হওয়ার কৃতিত্ব একমাত্র তাঁরই। আর সেই পদে থেকে সেনার উর্দিতেই মৃত্যুবরণ করলেন তিনি।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.