সূর্যের আলোতেই চলবে সাইকেল! নদিয়ার চন্দন বিশ্বাসের সৃষ্টিতে অবাক সকলে
Connect with us

বাংলার খবর

সূর্যের আলোতেই চলবে সাইকেল! নদিয়ার চন্দন বিশ্বাসের সৃষ্টিতে অবাক সকলে

Raju Dhara

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সাইকেল চালাতে আর পায়ের কসরত করতে হবে না। না, তলেও চলবে না। এবার সূর্যের আলোতেই চলবে সাইকেল। প্যাডেলও করতে হবে না। এমনই আজব সাইকেল বানিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিলেন নদিয়ার করিমপুরের বাসিন্দা কেচুয়াডাঙ্গার বাসিন্দা চন্দন বিশ্বাস। দেখতে অবিকল আর পাঁচটা সাধারণ সাইকেলের মতোই। তবে এই সাইকেল চালাতে করতে হয় না প্যাডেল। এমনকি না লাগে তেল, না রয়েছে ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার ঝঞ্ঝাট। কারণ সূর্যের আলোতেই চলে সাইকেল। সোলার প্যানেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই সাইকেলের ছাদ। আর এই সাইকেলে চেপে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার দূরে অফিসে যাতায়াত করেন চন্দন বিশ্বাস। আর এতে মাস গেলে মোটা টাকা সাশ্রয় হচ্ছে তাঁর। তাঁর এই কর্মকাণ্ড দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা।

বরাবরই বিজ্ঞানের প্রতি একটু বেশিই আগ্রহী চন্দন বিশ্বাস। কাজের অবসরে বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক মডেল তৈরি করেন তিনি। পেশায় তিনি করিমপুর রেজিস্ট্রি অফিসের কপিরাইটার। সেই রোজগারেই চলে সংসার। কিন্তু বিজ্ঞানে আগ্রহী চন্দনবাবুর মডেল তৈরি করাটা একটা নেশা। আগে বাইকে বা টোটোতে চেপেই চাকরিতে যেতেন। কিন্তু পেট্রোল-ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচও বেড়ে যায় তাঁর। তাই যাতায়াতের খরচ বাঁচাতে, তিনি ব্যাটারি চালিত সাইকেল তৈরির চিন্তাভাবনা করেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। তড়িঘড়ি ব্যাটারি, মোটর-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কিনে নিয়ে এসে সাইকেলে লাগিয়ে তৈরি করে ফেলেন ব্যাটারি চালিত সাইকেল।

কিন্তু সেখানেও সমস্যা। ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেলেই পায়ে প্যাডেল করেই সাইকেল চালাতে হত। তাই বিকল্প ভাবনা হিসেবে সোলার প্যানেল দিয়েই তৈরি করে ফেলেন সাইকেলের ছাদ। তারপর সূর্যের আলোতেই চলতে শুরু করল সাইকেল। এবং সেই সঙ্গে ব্যাটারির চার্জও হয়ে যায়। এই সাইকেল তৈরি করতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে চন্দন বাবুর। তাঁর তৈরি এই সৌর সাইকেল ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। একবার চার্জ হয়ে গেলে এই সাইকেল ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চন্দন বাবু।

Advertisement

এই সৌর সাইকেল নিয়ে বলতে গিয়ে চন্দন বিশ্বাস জানিয়েছেন, ‘যেভাবে প্রতিদিন পেট্রোলের দাম বাড়ছে, তাতে আমার খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই ব্যাটারি চালিত সাইকেল তৈরির ভাবনা আমার মাথায় আসে। কিন্তু মাঝ রাস্তায় ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেলে প্যাডেল করেই সাইকেল চালিয়ে বাড়ি আসতে হত। সেই কারণেই সাইকেলে সোলার প্যানেল লাগিয়েছি।’ আর স্বামীর এই কর্মকাণ্ডে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত চন্দন বাবুর স্ত্রী প্রণতি বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, ‘আমার স্বামী প্রথম থেকেই নতুন কিছু করার ব্যাপারে সব সময় আগ্রহী। তাই অফিস থেকে বাড়ি ফিরে প্রতিদিনই বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে পরীক্ষা করত। কয়েক মাস আগেই নিজেই এই সৌর সাইকেল তৈরি করেছে। আমি খুবই খুশি।’

চন্দন বিশ্বাসের এই কর্মকাণ্ড দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে গিয়েছেন প্রতিবেশীরা। চন্দন বাবুর তৈরি সোলার সাইকেল কিনতে তাঁরাও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এক প্রতিবেশী বলেছেন, ‘ভাবছি আমিও একটা সোলার সাইকেল কিনব। এতে আমার যাতায়াতে অনেক খরচ বেঁচে যাবে। সেই সঙ্গে পরিবেশ দূষণও অনেক কম হবে।’ তবে এখনই প্রতিবেশীদের চাহিদা মেটাতে রাজি নন চন্দন বিশ্বাস। এবার তাঁর পড়ে থাকা বাইকটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে চান বলেই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.