দেশের খবর
এক দেশে শোওয়ার ঘর আর অন্য দেশে রান্নাঘর ! এ কেমন গ্রাম?

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ভারত এমন এক দেশ, যার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বৈচিত্র্য বর্তমান। মানুষের ধর্মে-কর্মে-বর্ণে যেমন বৈচিত্র্য, তেমনই ভৌগোলিক দিক থেকে বৈচিত্র্যতা কম নেই এ দেশে। কোথায় সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়া দৃশ্যমান আবার কোথাও নীল সমুদ্রের কলতান, কোথাও কোথাও ঘন অরণ্যের মাঝে দেখতে পাওয়া যায় এক শৃঙ্গ গন্ডার আবার কোথাও মালভূমি।
আবার কোথাও আছে থরের মতো মরুভূমিও। আমাদের দেশ জনবহুল। এই জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ আজ গ্রামেই বসবাস করেন। যা এক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। এই গ্রামের মধ্যেও যে বৈচিত্র্যতা রয়েছে, তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। আর সেটাই এখনকার আলোচ্য বিষয়। এই দেশেই এমন এক গ্রাম আছে, যার অবস্থানগত বৈশিষ্ট্য বেশ অবাক করার মতো। আবার যা মজারও। এই গ্রামের অনেক বাসিন্দাদের বাড়ির শোওয়ার ঘর আর রান্নাঘর দুই দেশে। হ্যাঁ, সত্যি। এখানকার গ্রামবাসীরা নির্দ্বিধায় এক দেশ থেকে অর্থাৎ এক ঘর থেকে আর এক ঘর তথা আর এক দেশে কোনও ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন। এই গ্রামটির নাম লংওয়া। গ্রামটি নাগাল্যান্ডে অবস্থিত। আসলে এই গ্রামটির মধ্যে দিয়ে চলে গিয়েছে ভারত আর মায়ানমারের সীমান্তরেখা। তাই দু’দেশেরই নাগরিক হয়ে থাকছেন এই গ্রামের বেশ কিছু বাড়ির বাসিন্দারা। এই গ্রামটি মোন জেলার অন্তর্গত সবচেয়ে বড় গ্রাম।
বিশেষত কোনিয়াক আদিবাসীরা এই গ্রামে বসবাস করেন। এই গ্রামটি মোন শহর থেকে ৪২ কিমি দূরে অবস্থিত। তবে এই কোনিয়াক আদিবাসীরা বেশ ভয়ঙ্কর। কোনিয়াকরা যুদ্ধ প্রিয়। মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত ঘন অরণ্য বেষ্টিত এই লংওয়া গ্রামের আদিবাসী কোনিয়াকদের আরও ২৭টি গ্রাম আছে। মায়ানমারের পার্শবর্তী এলাকায়। এই গ্রামের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন- এখানে অনেক পরিবারের কাছেই থাকে পিতলের খুলির মালা। এই জিনিসটিকে তারা বেশ বিশ্বাস করে। এই গ্রামের রাজার থাকে মোট ৬০ জন স্ত্রী। মায়ানমার আর অরুণাচল প্রদেশ মিলিয়ে প্রায় ৭০টির বেশি গ্রামে এদের আধিপত্য আছে। এদের নেশার মূল সামগ্রী হলো আফিম। এই আফিম আসে মায়ানমার থেকে। কিন্তু এই গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য খুবই সুন্দর। যা পর্যটকদের কাছে অতি প্রিয়। এখানে আছে ডোয়াং নদী, শিলই হ্রদ, নাগাল্যান্ড বিজ্ঞান কেন্দ্র, হংকং মার্কেট ও আরও অনেক দর্শনীয় স্থান।