বাংলার খবর
ট্রাক্টরে চেপে সীমান্তের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ‘দুয়ারে সরকার’ নিয়ে পৌঁছলেন BDO
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্য সরকারের উদ্যোগে শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার প্রকল্প। রাজ্যের বাসিন্দাদের এই প্রকল্পের সহায়তা দিতে বদ্ধ পরিকর প্রশাসন।
ট্রাক্টরে চেপে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কাঁটাতার সংলগ্ন এলাকায় ‘দুয়ারে সরকার’ নিয়ে হাজির হলেন খোদ BDO। ভগবানগোলা-১ ব্লকের হনুমন্তনগর পঞ্চায়েতের টিঁকলিচরে পৌঁছে গেলেন বিডিও পুলককান্তি মজুমদার।
ক্যাম্পে উপস্থিত থেকে জাতি শংসাপত্র, লক্ষ্মীভান্ডার, খাদ্যসাথী, মানবিক ভাতা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের আবেদনপত্র নিজে হাতে পূরণ করলেন। কাজের ফাঁকে চর এলাকার একাধিক বাড়িতে গিয়ে পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের নানা অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন।
পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা পেতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। ঘরের কাছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের সুবিধা পেয়ে খুশি চরের বাসিন্দারা। দুয়ারে ক্যাম্পের পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়। স্বাস্থ্য শিবিরে স্থানীয়দের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ,পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে হচ্ছিল না বনিবনা, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী যুবতী
ভগবানগোলা-১ ব্লকের হনুমন্তনগর পঞ্চায়েতের টিঁকলিচর মুর্শিদাবাদের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি জনপদ। এই চরে প্রায় পাঁচশো পরিবার বাস করে। মোট জনসংখ্যা ১২৫০-১৩০০। চরের দরিদ্র মানুষগুলির প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ। গ্রীষ্মকালে পদ্মার গতিপথে বালির মধ্যে দিয়ে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার গিয়ে টিঁকলিচরে পৌঁছাতে হয়। তবে পদ্মার গতিপথে বালি থাকায় একমাত্র ট্রাক্টর ভরসা।
পদ্মার বুক চিরে এই ৫-৬ কিলোমিটার যেতে ঘন্টাখানেক সময় লাগে। বর্ষায় নৌকায় যেতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে খুব প্রয়োজন না থাকলে টিঁকলি চরের বাসিন্দারা চরের বাইরে পা বাঁড়ান না।
গত ২১ মে থেকে বিডিও অফিসে চতুর্থ দফায় দুয়ারে সরকার ক্যাম্প চালু হয়। যদিও সেখানে টিঁকলি চরের বাসিন্দাদের সেভাবে দেখা যায়নি। যার ফলে সীমান্তের কাঁটাতার সংলগ্ন চরের বাসিন্দারা সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। বিষয়টি লক্ষ্য করে সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবা চরের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দিতে বিডিও দুয়ারে ক্যাম্প নিয়ে হাজির হন টিঁকলিচরে।
আরও পড়ুন: সবচেয়ে বড় ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং সিস্টেম! গিনেস বুকে উঠতে চলেছে ব্যান্ডেল স্টেশনের নাম
চরের বাসিন্দা গোলাপী বিবি গত কয়েক বছর ধরে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে এখন আর দেখতে পান না। স্থানীয়দের কাছে গোলাপী বিবির বিষয়ে জানার পরেই বিডিও সাহেব ওই বৃদ্ধার বাড়িতে পৌঁছে যান। তাঁর ভাতার আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেওয়ার পাশাপাশি চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
চরের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব আজাহার আলি বলেন, ”অতটা পথ পেরিয়ে বিডিও অফিসে দুয়ারে ক্যাম্পে যাওয়ার মত শারীরিক ক্ষমতা নেই। চরে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের ব্যবস্থা করার জন্য বিডিও সাহেবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
আরও পড়ুন: ‘আমার পার্টির লোক হলে টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম’, কেন বললেন মুখ্যমন্ত্রী!
বিডিও পুলককান্তি মজুমদার বলেন, ”বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এবং বিশেষভাবে শারীরিক সক্ষম ব্যক্তিদের আসতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই দুয়ারে সরকার ক্যাম্প নিয়ে চরের মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়া। ১০০ শতাংশ মানুষকে ক্যাম্পের আওতায় নিয়ে আসাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”