দারিদ্র্যতা প্রতিবন্ধক হতে পারেনি সাফল্যের পথে, IIT-পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল
Connect with us

বাংলার খবর

দারিদ্র্যতা প্রতিবন্ধক হতে পারেনি সাফল্যের পথে, IIT-পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রবল আর্থিক কষ্টের মধ্যেও জেদ ও মনের জোরে এবার সর্বভারতীয় স্তরে ভারতীয় প্রযুক্তি বিদ্যা প্রতিষ্ঠান ( আই আই টি) এর “এম. এস. সি “র এন্ট্রাস পরীক্ষায় ২৫১ র‍্যাকিং করে সকলকে চমকে দিয়েছে বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর পাড়ার কলেজে পড়া ছাত্র সীতানাথ মজুমদার। কিন্তু সবাইকে চমকে দিলেও কিভাবে তার এই সাফল্যকে ধরে রেখে তার পড়াশোনা চালিয়ে উঠবে সে নিয়ে নিজে ও তার পরিবারকে ফেলে দিয়েছে ঘোর দুশ্চিন্তায়। বাধ্য হয়ে সরকারি সাহায্যের আশার দিকে তাকিয়ে বসে রয়েছে সীতানাথ ও তার পরিবার।

সীতানাথের বাবা সৌরেন্দ্রনাথ মজুমদার পুরোহীতগিরি করে কত আর পান তাই মা কেই আর পাচটা গরিব পরিবারের মত সেই সংসার চালানোর হাল ধরতে হয়েছে। প্রবল গরিবীর সাথে লড়াইয়ে সঙ্গে ছিল শুধু বড় হওয়ার অদম্য ইচ্ছা। সেই ইচ্ছা পুষে রাখতে শখ আলহ্যাদ ছেড়ে দিয়ে জীবন সংগ্রামের দারিদ্র্যের নির্মম বাস্তবতার মধ্যে পড়াশোনা চালিয়ে সফল হয়েছে সর্বভারতীয় স্তরে এই পরীক্ষায়। যা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর হাইস্কুল পাড়ায় সীতানাথদের বাড়ি। সেখানে ইটের গাথনির দেওয়াল আর টিনের ছাউনির জরাজীর্ণ দুই কক্ষের ঘর। বৃষ্টি হলে টিনের ফুটো বেয়ে পড়ে জল। বাড়িতে পাওয়া গেল না তার বাবাকে, কেননা বাবাকে নিত্যদিনের মত পুরোহিতের জজমানগিরি করতে বেড়িয়েছেন। মা রয়েছেন বাড়িতে। সীতানাথ তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান।তাই ছেলের এই অভাবনীয় সাফল্যের পরেও তার ভবিষ্যৎ পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় সীতানাথের বাবা – মা।

Advertisement

আরও পড়ুন: সুরের জাদুতে মূর্ছা যান শ্রোতারা, জনপ্রিয় এই গায়ককে দেখা যাবে অন্য ভূমিকায়

সীতানাথের মা সুমিতা মজুমদার বলেন , ‘ভালো ফল পেয়ে ছেলের খুব খুশি হওয়ার কথা। অথচ সে মন খারাপ করে বসে আছে।আর্থিক দুরবস্থার জন্য ওখানে ভর্তি হতে পারবে কি না, সেটা নিয়েই তারা চিন্তায়। ভর্তি হওয়া ও থাকা-খাওয়ার জন্য অনেক টাকা লাগবে। আমার তো দুবেলা ঠিকমতো খাবারই জোটে না। ছেলের পড়ালেখার খরচ পাব কোথায়? তাই বাধ্য হয়ে সরকারি কোন সাহায্য ও কোন সুহৃদয় ব্যাক্তির সহয়তা করলে সীতানাথের এই পড়াশোনা চালিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। নইলে কি করব তা ভেবে পাচ্ছিনা।’ 

অপরদিকে সীতানাথ জানিয়েছে,  সে খাদিমপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক সায়েন্স নিয়ে পাশ করে বর্তমানে বালুরঘাট কলেজে সিক্সথ সেমিস্টারের পড়ছে। তার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পিছনে যেমন স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে সাহায্য পেয়েছে সে, তেমনি কলেজের অধ্যাপকদের কাছ থেকেও নানা ভাবে সাহায্য পেয়েছে সে। বর্তমানে আই আই টি তে পড়াশোনা করতে যাওয়ার জন্য সে সরকারি আর্থিক সহয়তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। পেলে পারবে তার এতদিনের স্বপ্ন সফল করে বাবা মার মুখে হাসি ফোটাতে। না হলে কি করবে তা ভেবে পাচ্ছে না সে।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রতিবেশীর সঙ্গে বিবাদে মাথা ফাটল তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলরের

যদিও সীতানাথ যে বালুরঘাট পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীপান্বিতা সীংহ রায় জানিয়েছেন তিনি বিষয়টি জানেন, তিনি ওর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য সব রকম সাহায্য করবেন, বলে তিনি জানান।

এখন দেখার চরম দারিদ্রর সঙ্গে লড়াই চালিয়েও সীতানাথ সরকারি বা কোনও সুহৃদয় ব্যাক্তির সহয়তায় নিজের স্বপ্ন সফল করে উঠতে পারে কি না। 

Advertisement