বাংলার খবর
শপথ নিলেন বাবুল, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ ডেপুটি স্পিকারের
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ:জল্পনার অবসান। বুধবার দুপুরে বিধানসভার নৌসের আলি কক্ষে শপথ নিলেন বালিগঞ্জের নবনির্বাচিত বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়। এদিন তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিষ বন্দোপাধ্যায়। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পার্থ চট্যোপাধ্যায়, সন্ধ্যা টুডু, তাপস রায়, চিফ হুইপ নির্মল ঘোষ, ফিরদৌসী রহমান, গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, মন্ত্রী অখিল গিরি, হুমাউন কবির, অভিজিৎ সিনহা, দেবেশিষ কুমার। বাবুলকে শপথবাক্য পাঠ করান বিধানসভার সচিব ধৃতিরঞ্জন পাহাড়ী। শপথবাক্য পাঠ করানোর পরই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তুললেন ডেপুটি স্পিকার। সেই সঙ্গে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
ডেপুটি স্পিকার আশিষ বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, ‘রাজ্যপাল আমাদের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করেছিলেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা একটা পরিবারে বিশ্বাসী। আমরা এক হয়ে কাজ করব। স্পিকার আমায় চিঠি লিখে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করার অনুরোধ করেছেন সেই জন্যই আজ এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। আজ এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে স্পিকার উপস্থিত না থাকতে পারার জন্য খুবই খারাপ লাগছে। বাবুল সুপ্রিয়র অসুবিধা হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে শপথগ্রহণ না হওয়ার জন্য সদস্য হিসেবে তিনিও কাজ করতে পারছিলেন না। আজ সেটা অনুষ্ঠিত হল। আমরা তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি।’ শপথ নেওয়ার পর বাবুলও জানিয়ে দিয়েছেন, আগে যা হয়েছে তিনি ভুলে যেতে চান। পুরনো বিভেদ ভুলে মানুষের জন্য কাজ করতে চান।
গত ১৬ এপ্রিল বালিগঞ্জের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তার ২৫ দিন পর অনেক টালবাহানা, জল্পনার পর শপথ নিলেন বাবুল। তাঁর শপথগ্রহণ নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই বাবুলের শপথগ্রহণের অনুমোদন আটকে রেখেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছিল, সীমান্তে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি নিয়ে বিধানসভায় যে বিরোধী প্রস্তাব পাস হয়েছিল সেই সমস্ত নথি বিধানসভার কাছ থেকে চেয়ে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু বিধানসভার পক্ষ থেকে সেই সমস্ত তথ্য রাজভবনে না পাঠানোয় বাবুলের শপথগ্রহণের অনুমোদন রাজ্যপাল দিচ্ছিলেন না বলেই অভিযোগ তুলেছিল রাজ্যের শাসক দল। সেই নিয়ে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের মধ্যে কম বিরোধ হয়নি।
বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে রাজ্যপালের। কিন্তু রাজ্যপাল চাইলে অন্য কাউকে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দিতেই পারেন। সাধারণভাবে বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য বিধানসভার স্পিকারকেই মনোনীত করেন রাজ্যপাল। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়কে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ডেপুটি স্পিকারকেই মনোনীত করেন। কিন্তু স্পিকারকে অপমান করার অভিযোগ তুলে রাজ্যপালের সেই অনুরোধ খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার। যা নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। ফলে বাবুলের শপথগ্রহণও আটকে পড়ে। অবশেষে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের লিখিত অনুরোধেই বাবুলকে শপথবাক্য পাঠ করাতে ডেপুটি স্পিকার আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজি হন। এদিন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর সেই কথাই জানিয়েছেন আশিষ বন্দোপাধ্যায়ও।