বাংলার খবর
বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিলেন হুগলির ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া অয়ন
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে যন্ত্র! এও কি সম্ভব! কিন্তু, এমনই ডিভাইস তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিলেন হুগলির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র অয়ন বাগ। তাঁর তৈরি এই ডিভাইস জলের উচ্চতা মাপার কাজ করবে। যার নাম ‘ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম’।
অনেক সময় দেখা যায় ডিভিসি, মাইথন অথবা পাঞ্চেতের মতো জলাধার গুলো অতি বৃষ্টি হলে জল ধরে রাখতে পারে না। তাই জল ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে নদী বা ক্যানেল গুলো প্লাবিত হয়। ডিভিসি জল ছাড়লে প্রতিবছরই নিম্ন দামোদর, বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। যা নিয়ে কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অয়নের তৈরি এই ডিভাইস নদীতেই থাকবে। আর তা দিয়ে প্রশাসনের কর্তারা তাঁদের দফতরে বা বাড়িতে বসেই জলস্তর মাপতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারবেন। এই ডিভাইস কাজ করবে আল্ট্রা সনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। এটি পরিচালিত হবে একটি অ্যাপের সাহায্যে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে, যেখানে ইন্টারনেট আছে, সেখান থেকেই জানা যাবে সে সময় কোন নদীতে জলস্তর কী অবস্থায় আছে। নদীর জল বাড়লে হলুদ বা লাল সতর্কতা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফে। সাবধান করা হয় নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষদের। প্রয়োজনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। এই ডিভাইস সেই কাজকেই আরও গতি দেবে।
বাঁধগুলো যেখানে জল ধরে রাখে এবং প্রয়োজনে জল ছাড়ে তারাও সুবিধা পাবে। কিউসেক মেপে জল ছাড়ে বাঁধ গুলো। এক সঙ্গে অনেক বেশি পরিমান জল নদী গুলো নিতে পারে না। ফলে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। এই ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম ডিভাইস দিয়ে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়তে পারবে বাঁধ কর্তৃপক্ষ। হুগলি জেলা প্রশাসনের আধিকারীকরা ইতিমধ্যেই হুগলি ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজে (এইচইটিসি) গিয়ে অয়নের কাজ দেখে প্রসংশা করেছেন। জেলা প্রশাসন থেকেই এইচইটিসি কলেজের ইলেক্ট্রিক্যাল কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়িয়ারিং বিভাগের ছাত্র অয়নকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
হুগলির আরামবাগ মহকুমা বন্যাপ্রবণ এলাকা। ফি বছরই এখানে বন্যা হয়। এই ডিভাইসকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হতে পারে।তারজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
চন্দননগরের বাসিন্দা অয়ন জানান, ‘১৫ কিমি অন্তর এই ডিভাইস বসিয়ে রাখলে জলের উচ্চতা কতটা বাড়ল বা কমল তা বোঝা যাবে। বাঁধ গুলো থেকে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়তে খুবই কার্যকরি হবে এই ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম।’