দেশের খবর
স্কুলে বন্ধুরা ছক্কা বলে ডাকত, অপমানে আত্মহত্যা ছাত্রের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: অপরাধ বলতে তাঁর মধ্যে একটু ‘মেয়েলি’ ভাব বেশি ছিল। তাই স্কুলের সহপাঠীদের কাছ থেকে দিনের পর দিন সহ্য করতে হয়েছে লাঞ্ছনা, টিটকারি, উপহাস। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরেই বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করল এক ছাত্র। ঘটনাটি ছয় মাস আগের হলেও সম্প্রতি এই বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন সন্তানের মা। এই ঘটনায় হরিয়ানার ফরিদাবাদে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ১৫ তলা বহুতল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন আরতি মালহোত্রার পুত্র আরভি মালহোত্রা। এতদিন চুপ থাকলেও ছেলের মৃত্যু নিয়ে আরতি মুখ খোলায় রীতিমতো স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এ ব্যাপারে এখনও স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’ নামে এক ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আরতি মালহোত্রা। ওই পোস্টে ছেলের প্রতি অন্যায়, অত্যাচারের কথা তুলে ধরে আরতি লিখেছেন, ‘আমার ছেলে ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। স্কুলে বন্ধুরা ওকে ছক্কা বলে ডাকত। মজা করত, অপমানজনক কথা বলত। সেই মানসিক যন্ত্রণা এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে স্কুল থেকে ফিরে প্রতিদিনই প্রচণ্ড কান্নাকাটি করত আরভি। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।’
আরতি আরও লিখেছেন, ‘এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে একটা সময় মরিয়া হয়ে উঠেছিল আরভি। নিজেকে পুরুষ প্রমাণিত করতে বন্ধুদের সঙ্গে ভলিবল খেলা শুরু করে। যদিও আরবি ছোট থেকেই গান-বাজনা, ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসত। তবে হাজার চেষ্টা করেও মেয়েলি তকমা ঘোচাতে পারেনি আরভি। ক্লাস নাইনে ওঠার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। একদিন স্কুল থেকে ফিরে আরভি অভিযোগ করে, তাকে নাকি বন্ধুরা চোখ বেঁধে নগ্ন করে দিয়েছিল। তারপর থেকেই ও আর স্কুলে যেতে চাইত না। প্রচন্ড আতঙ্কের মধ্যে থাকত।’
স্কুল ছুটি থাকলে আরভি ভালো থাকত বলেও দাবি করেছেন আরতি। তিনি বলেছেন, ‘স্কুল ছুটি থাকলে ওর মন খুবই ভালো থাকত। ছুটিতে একদিন আরভি তো নেইল পলিশ ও গহনা পরতে চেয়েছিল। ছুটির সময় বেশ খুশিতেই ছিল ও। কিন্তু স্কুল খুলতেই আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সে। এর মধ্যেই একদিন হঠাৎ আরভি ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বলে, সে আর পরীক্ষা দেবে না। তার কয়েক ঘণ্টা পরই ফ্ল্যাটের ১৫তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। ঘটনাস্থল থেকে সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছিল। ও আমাকে একটা কাজ খুঁজে দিতে বলেছিল। এবং লিখেছিল, আমি একজন সেরা মা।’