দেশের খবর
ভোট এলেই গঙ্গায় স্নান করেন, আবার লাশও ভাসান! পানাজির সভা থেকে মোদি ও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মমতার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সূর্য প্রণাম ও পুজো দেওয়ার পাল্টা চণ্ডীপাঠ করেই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পানাজিতে দলীয় সভার মঞ্চ থেকেই চন্ডীপাঠ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলায় বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির মঞ্চ থেকে চণ্ডীপাঠ করতে বহুবার শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে গোয়ায় এই প্রথম। এর আগেও দলের সংগঠনকে মজবুত করতে গোয়া সফরে এলেও চণ্ডীপাঠ করতে দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন, সোমবার বারাণসীর ললিত ঘাটে গঙ্গার জলে নেমে প্রধানমন্ত্রীর সূর্য প্রণাম ও গঙ্গা পুজোর পাল্টা হিসেবে গোয়ায় চন্ডীপাঠ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, সোমবারই নিজের সংসদীয় কেন্দ্র বারাণসীতে দু’দিনের সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার সকালে কালভৈরব মন্দির পুজো দিয়ে বারাণসী সফর শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।
তারপর বিশেষ তরীতে করে ললিতা ঘাটে গিয়ে সেখানে স্নান সেরে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দেন এবং তারপর কাশী বিশ্বনাথ করিডোরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার পানাজির সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই গঙ্গাস্নান নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘ভোট এলেই ধর্মকে হাতিয়ার করে। ধর্মের নামে ভেদাভেদ করে। ভোট এলেই গঙ্গায় ডুব দেয়। ভোট এলে উত্তরাখণ্ডের মন্দিরে গিয়ে বসে থাকে। আর করোনার সময় সেই গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসিয়ে দেয়। গঙ্গাকে অপবিত্র করে। বিজেপির কাছ থেকে আমায় ধর্মের পাঠ শিখতে হবে না। আমি নিজে একজন ব্রাহ্মণ। বিজেপির কাছ থেকে সার্টিফিকেট পাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আমার বাড়িতে কালী পুজো হয়। আমরা দুর্গা পুজো করি, জগদ্ধাত্রী পুজো করি। আমার প্রথম পরিচয় আমি মানুষ।
বিজেপি সার্টিফিকেট দেওয়ার কে? যাঁরা বিজেপিকে ক্ষমতায় এনেছিলেন, আজ তাঁরা বুঝতে পারছেন বিজেপি কী ভয়ঙ্কর পার্টি। আমাদের বাংলায় ধর্মের ভেদ নেই। সবাই নিজের নিজের ধর্মীয় আচরণ পালন করতে পারেন। সামনেই বড়দিন। বাংলায় গত কয়েক বছর ধরে বড় করে বড়দিন পালন হয়ে আসছে।’ এরপরই কয়েক লাইন চন্ডীপাঠ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি সারা বছর চণ্ডীপাঠ করেন। তাই গোটা বইটাই তাঁর মুখস্থ। শুধু ভোট এলে ধর্মের স্তুতি করবেন, এমন তিনি নন। পাশাপাশি দুর্গা পুজোয় ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে পানাজিতে সহযোগী দল মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি (এমজিপি)-র সঙ্গে যৌথ সভা করে তৃণমূল। সেই সভা থেকেই এই মন্তব্য করেন তিনি।
উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এদিনের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির উদ্দেশ্যে পরিষ্কার জানিয়ে দেন গোয়াতে দিল্লির দাদাগিরি চলবে না। সেই সঙ্গে বহিরাগত ইস্যুকে তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি বাইরে থেকে এসে গোয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাই না। তেমনই দিল্লি থেকে বহিরাগতরা এসে গোয়া চালাবেন তা চলবে না। বিজেপির দাদাগিরি চলবে না। গোয়া শাসন করবেন এখানকার স্থানীয় মানুষই। তাই গোয়ার ভোটে বিজেপিকে শেষ করতে হবে।’ এদিন ‘সেভ গোয়া ফ্রম বিজেপি’, ‘সেভ গোয়া ফ্রম ডিজাস্টার’ স্লোগানও তোলেন মমতা।
মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে কৃষক হত্যা নিয়েও বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। লখিমপুর কৃষক হত্যা যে পূর্বপরিকল্পিত সেটা মঙ্গলবার সকালেই নিজেদের রিপোর্টে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত বিশেষ তদন্তকারী দল তথা সিট। সেই কথা উল্লেখ করে এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথেরও পদত্যাগ দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘লখিমপুরে কৃষকদের উপর গাড়ি চালিয়ে খুন করে দিল মন্ত্রীর ছেলে। আজ সিট রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্টে পরিস্কার বলা হয়েছে এটা পরিকল্পিত খুন। তাহলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া উচিৎ নয় কী? এই নিয়ে তো প্রধানমন্ত্রীর কথা বলা উচিত।
‘ লখিমপুরকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্র এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। শুধু বিজেপি নয়, মঙ্গলবারের সভা থেকে বামেদের সঙ্গে গোপন আঁতাত নিয়েও কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘আমরাও কংগ্রেস করতাম। কিন্তু দেখেছি কংগ্রেস বরাবর বামেদের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম আমাদের মার…