বাংলার খবর
শুভেন্দুকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে রাজভবন থেকে বেরিয়েই ব্রাত্য বসু বললেন ‘আমাদের রাজ্যপাল’

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্যের সমস্ত সরকারি এবং সরকারি দফতর অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর পরিকল্পনা এসেছে তাঁর মাথা থেকেই। আর সেই বিল সম্প্রতি বিধানসভায় বাদল অধিবেশনে পাশ হয়েও গিয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে ‘ আমাদের রাজ্যপাল’ বলে সম্বোধন করলেন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁদের কথোপকথন জারি থাকবে বলেই জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
একাধিক দুর্নীতিতে নাম থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কেন সিবিআই বা ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেফতার করছে না, তা নিয়ে সোমবার থেকেই রাস্তায় নেমেছে রাজ্যের শাসক দল। তাই শুভেন্দু অধিকারীকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাতে মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের ৮ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের কাছে গিয়েছিল। সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষ, সায়নী ঘোষ, শশী পাঁজা, অর্জুন সিং, বিশ্বজিৎ দেব, তাপস রায় এবং ফিরোজা বিবি। এদিন সকাল এগারোটা নাগাদ রাজভবনে পৌঁছায় তৃণমূলের এই প্রতিনিধি দল। প্রায় তিন ঘণ্টা রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর দুপুর দু’টো নাগাদ রাজভবন থেকে বেরোন তাঁরা।
সেখান থেকে বেড়িয়েই ব্রাত্য বসু বলেন, ‘রাজ্যপাল আমাদের বক্তব্য শুনেছেন।ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাঁকে কিছু তথ্য জানানো হয়েছে। রাজ্যপালও তাঁর কিছু মতামত জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে আলোচনা আশাজনক। তাঁকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এবং তদন্ত যাতে প্রভাবিত না হয় তা লক্ষ্য রাখার জন্য রাজ্যপালের কাছে আমরা অনুরোধ করেছি। আশা করি যে বিশেষ ইস্যুতে আমাদের প্রতিবাদ, তা গুরুত্ব দিয়ে উনি বিবেচনা করবেন।’ তারপরই তিনি বলেন, ‘উনি আমাদের রাজ্যপাল। বিজেপিরও রাজ্যপাল। রাজ্যপাল সংবিধানের প্রধান। আর মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রধান। আমাদের মধ্যে এই কথোপকথন আগামী দিনেও জারি থাকবে।’
রাজভবন থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বহু বছর পর রাজ্যপালের সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের দীর্ঘ বৈঠক হল। দীর্ঘ দিন পরে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যপালও উৎসাহ দেখিয়েছেন। উনি ওঁর কথা বলেছেন, আমরা আমাদের। আগামী দিনে আলোচনা জারি থাকবে। বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক কারণে অপপ্রয়োগ করছে বিজেপি। এ কথা রাজ্যপালকে জানিয়েছি আমরা।’
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, ‘যাঁরা বিজেপিতে গিয়ে নাম লেখাচ্ছেন, তাঁদের নিয়ে তদন্ত হচ্ছে না। বিজেপি গণতন্ত্র বিরোধী চক্রান্ত করছে। এ কথা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে। সুদীপ্ত সেনের লিখিত বিবৃতিতে এমন নেতার নাম রয়েছে, যিনি পরবর্তী সময়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। নারদ মামলায় তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। একই মামলায় শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হয় না। বিজেপি যেন ওয়াশিং মেশিন! বিজেপি অফিসে স্ক্রিন লাগিয়ে বলা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হোক। আর বিজেপিতে যাওয়ার পর গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বলছে ২০২৪ সালে সরকার ফেলে দেবে। রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত করছে। বিজেপিতে গেলেই তদন্তের বাইরে। আমরা রাজ্যপালকে জানিয়েছি, রাজ্যে বিজেপির জনভিত্তি নেই।’