সামনেই পুরভোট, প্রত্যেক পুরসভায় পর্যবেক্ষক নিয়োগের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
Connect with us

ভাইরাল খবর

সামনেই পুরভোট, প্রত্যেক পুরসভায় পর্যবেক্ষক নিয়োগের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সামনেই পুরভোট। ইতিমধ্যেই পুরভোটের তোড়জোড় শুরু হয়েছে রাজ্যে। কলকাতা ও হাওড়া পুর নিগমের ভোট করার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী বছরের গোড়ার দিকেই রাজ্যের বাকি সব পুরসভাতেও ভোট।

তাই কোনও রকম ফাঁকফোকর রাখতে রাজি নয় রাজ্যের শাসক দল। বুধবার মধ্যমগ্রামে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে পুরসভার কাজ নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কারণেই রাজ্যে প্রত্যেক পুরসভায় একজন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বুধবার মধ্যমগ্রামের নজরুল শতবার্ষিকী সদনের প্রশাসনিক বৈঠকে পুরসভার প্রশাসকদের কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যারাকপুর, টিটাগড়, কামারহাটি, নোয়াপাড়া, উত্তর দমদম-সহ জেলার একাধিক পুরসভার কাজে যে মুখ্যমন্ত্রী খুশি নন, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ক্ষোভের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রশাসক-মণ্ডলীতে যারা আছেন তাঁরা কেন এলাকা ঘুরে দেখেন না? কেন কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না? যিনি ভাল কাজ করবেন না, আগামী দিনে ভাবতে হবে। মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াতে হবে।

এমন অনেক অভিযোগ আছে, মানুষের প্রয়োজনে রাজনৈতিক লোকেদের পাওয়া যায় না। ফোন বন্ধ থাকে বা ফোন ধরেন না। এ রকম চলবে না। রাজনীতির লোকেদের সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মানুষের পাশে থাকতে হবে। আলো, জল ও রাস্তা ঠিক রাখাই অগ্রাধিকার। কাজ ফেলে রাখা যাবে না। পুরসভা এলাকায় অনেক সমস্যা আছে। আপনারা এলাকা ঘুরে দেখছেন না কোথায় কী সমস্যা আছে। কেন এলাকার কাজে গুরুত্ব দিচ্ছেন না? কাজটাই আসল। কাজ হচ্ছে কি না মানুষ সেই কৈফিয়ৎ চাইবে।’ তার পরই প্রতিটি পুরসভায় এক জন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যবেক্ষকরা কাউন্সিলরদের কাজের উপর নজরদারি করবেন। কোথায় কী সমস্যা জানতে এলাকায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। সেই রিপোর্ট যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।

Advertisement

এদিনের বৈঠকি এলাকাকে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ প্রশাসকদের দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাস্তার ধারে জঞ্জালের স্তূপে বা ছেঁড়া হোর্ডিং রাখা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এলাকার বিধায়ক সাংসদ, জেলা সভাধিপতিদের সঙ্গে পুর প্রশাসকদের সুসম্পর্ক বজায় রাখারও বার্তাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘রাজনীতির লোকেদের ফোনে পাওয়া যায় না। এই রকম অভিযোগ পেয়েছি। কেন মানুষ আপনাদের ফোনে পাবে না? এতদিন অনেক নিয়েছেন। এ বার মানুষকে পরিষেবা দিন।’ এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বিধায়কদেরও তাঁরা এলাকার রাস্তা ও জল সংক্রান্ত কাজকর্ম দেখাশোনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভাগ করে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার কথাও বলেছেন। স্কুলের ভবন তৈরির মতো কাজের দায়িত্ব সাংসদদের ওপর দিয়েছেন তিনি।

এদিনের বৈঠকি কলকাতা পুলিশ এবং বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্দ্বন্দ্বেরও সমালোচনাও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত চিংড়িহাটা মোড়ে কেন এত ঘন ঘন দুর্ঘটনা ঘটে, তার কৈফিয়ৎ চান তিনি। কলকাতা পুলিশ এবং বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের মধ্যে ইগোর লড়াইয়ের বলি সাধারণ মানুষ হবেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে চিংড়িহাটায় আর যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, সেদিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ পুলিশকে নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, এবার থেকে পয়লা জানুয়ারি রাজ্যে ছাত্র দিবস পালিত হবে বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১২ জানুয়ারি মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ২ জানুয়ারি থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত দুয়ারে সরকার ক্যাম্প বসবে।

মকর সংক্রান্তির পর ২০ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্যাম্প হবে। ২০ নভেম্বর ঋণ মেলার মাধ্যমে ১০ জন পড়ুয়ার হাতে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দেওয়া হবে বলেও এদিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে সাংসদ সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, নুসরাত জাহানের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরাও।

Advertisement