বাংলার খবর
দু’বছর ধরে ক্লাস করার পর ছাত্র জানতে পারল সে স্কুলের ছাত্রই নয়!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে এক স্কুল শিক্ষককে গ্রেফতার করল রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রায়গঞ্জ শহর সংলগ্ন রূপাহারের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২ বছর ধরে একের পর এক ভুয়ো তথ্য দিয়ে লক্ষাধিক টাকা প্রতারনার অভিযোগ আনলেন এক অভিভাবক। ঘটনাসূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলার বারোবিশা এলাকার বাসিন্দা সীমা দারাক করোনা পূর্ববর্তী সময়ে তাঁর ছেলে হার্দিক দারাককে একাদশশ্রেনীতে ভর্তির জন্য রায়গঞ্জের রুপাহারে অবস্থিত ওই বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সীমা দারাক জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনীশ কুমার সিংহের সঙ্গে। যোগাযোগের পর শিক্ষকের কথাতেই শুরু হয় ভর্তি প্রক্রিয়া। সীমা দেবীর অভিযোগ, গত ২০২০’র নভেম্বরে ৪৩ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁর ছেলেকে অনলাইনে ভর্তি নেন মনীশবাবু। এরপর শুরু হয় করোনা পর্ব। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয়। অনলাইনে চলে পঠনপাঠন। ধাপে ধাপে বিভিন্ন ফি বাবদ লক্ষাধিক টাকা প্রদান করেন অভিভাবক।
সীমা দেবীর দাবী, অনলাইনে ১ পরীক্ষাও দেয় তাঁর ছেলে। সেই পরীক্ষার ভুয়ো রেজাল্ট বানিয়ে পাঠানো হয় তাকে। কিন্তু আসল তথ্য সামনে আসে ফাইনাল পরীক্ষার আগে। ছেলেকে নিয়ে ২ বছর পরে গত মে মাসে অ্যাডমিট নিতে আসলে বার বার ঘোরানো হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে এসে তিনি অভিযুক্ত শিক্ষককে চেপে ধরতেই পুরো প্রতারনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
এরপর মাথায় বজ্রপাত হয় সীমা দেবীর। তিনি জানতে পারেন, তাঁর ছেলের নামে কোনৈ অ্যাডমিশন ইস্যুই হয়নি স্কুলে। ঘটনার পর রীতিমতো মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সীমা দেবীর ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই পলিশ এসে মনীশ কুমার সিংহ নামে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক। যদিও পাল্টা অপ্রাসঙ্গিক সাফাইও দিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনার জেরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের বানিজ্য বিভাগের প্রধান সরোজ কুমার সরকার। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সরোজ বাবু। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।