দেশের খবর
আদালত থেকে বের হতেই উদয়পুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের উপর চড়াও উত্তেজিত জনতা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজস্থানের উদয়পুরে কানহাইয়া লাল নামে এক দর্জিকে গলা কেটে নিশংসভাবে হত্যা করার ঘটনায় চার অভিযুক্তের ওপর চড়াও হল উত্তেজিত জনতা। শনিবার জয়পুরে এনআইএ-এর বিশেষ আদালতে হাজির করা হয় চার অভিযুক্তকে। এখান থেকে বের হওয়ার সময়ই চার অভিযুক্তের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে উত্তেজিত জনতা। তাদের মারধরও করা হয়। যদিও পুলিশ তৎপর থাকায় তাদের দ্রুত গাড়িতে তুলে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
উদয়পুরের এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে তদন্ত করছে এনআইএ। দু’দিন আগেই তদন্তকারী সংস্থার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অভিযুক্তদের দিল্লিতে নিয়ে এসে তদন্ত করা হবে না। রাজস্থানেই তাদের জেরা করা হবে। এবং জয়পুরে এনআইএ-এর বিশেষ আদালতেই এই মামলার শুনানি হবে। সেই মতো শনিবার অভিযুক্তদের জয়পুরের এনআইএ-এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। শুনোনির পর বিচারপতি অভিযুক্তদের আরও দশ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার উদয়পুরে পেশায় দর্জি কানহাইয়া লাল তেলিকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন রাতেই দুই অভিযুক্ত রিয়াজ আখতারি এবং গোস মহম্মদকে গ্রেফতার করে রাজস্থান পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মহসিন এবং আসিফ নামে আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই এই চার অভিযুক্তকে এনআইএ-এর বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেও আদালত থেকে বেরোনোর সময় তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে উত্তেজিত জনতা।
উদয়পুরের এই খুনের ঘটনায় পাকিস্তানি যোগ রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ঘটনায় ধৃত এক অভিযুক্তের মোবাইল ফোন থেকে সেই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলেই দাবি করা হয়েছে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার পর তার ফোন থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লেখা হয়েছিল ‘কাজ হয়ে গিয়েছে’। এবং সেই গ্রুপটিতে পাকিস্তানের একাধিক নাগরিক রয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি কানহাইয়া লালকে রীতিমতো পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে। এবং খুনের কাজে ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত রিয়াজ আখতারির মোটরবাইক ব্যবহার করা হয়েছিল। এবং সেই বাইকের বিশেষ নম্বর পেতেও কয়েক হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ করা হয়েছিল বলেও দাবি করেছে তদন্তকারী সংস্থা। কারণ বাইকটির নম্বর আরজে ২৭ এএস ২৬১১। এনআইএ আধিকারিকদের অনুমান, ২৬/১১ মুম্বই হামলার তারিখের সঙ্গে মিলিয়েই এই নম্বর বেছে নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর থেকেই উদয়পুর-সহ গোটা রাজস্থানে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করার পাশাপাশি স্থানীয় আইজি ও পুলিশ সুপারস-সহ ৩২ জন পুলিশ আধিকারিককেও বদলি করা হয়েছে। সাসপেন্ড করা হয়েছে এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরকেও। তবে শনিবারই উদয়পুর সহ কিছু এলাকায় কড়াকড়িতে কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।