বাংলার খবর
ডায়মন্ড হারবারের পর এবার এই তিন জেলাতেও হেল্পলাইন চালু অভিষেকের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: নিজের সংসদীয় কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের পর এবার আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি- এই তিন জেলার জন্যেও হেল্পলাইন নম্বর চালু করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্লক নেতা বা পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে, তা সরাসরি এই হেল্পলাইন নম্বরের মাধ্যমে তাঁর কাছে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ধূপগুড়িতে দলীয় সমাবেশে থেকে এই হেল্প লাইনের কথা ঘোষণা করেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। এই হেল্পলাইন নম্বরটি হল- 7887778877। প্রতিদিন সকাল ছ’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত এই হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে সমস্ত অভাব, অভিযোগ, সমস্যার কথা জানানো যাবে বলেই জানিয়েছেন অভিষেক।
সামনের বছরই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কত লোকসভায় এবং বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলাগুলিতে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি তৃণমূল। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার কড়া দাওয়াই দিলেন অভিষেক। মঙ্গলবার হেল্প লাইনের কথা ঘোষণা করতে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘কিছুদিন আগেই ডায়মণ্ডহারবারে আমি একটি হেল্পলাইন চালু করেছি। আমি কোচবিহারে, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার জন্য নম্বর দিয়ে যাচ্ছি। নম্বরটা লিখে নিন- 7887778877। সকাল নটা থেকে ছটা পর্যন্ত এই নম্বরে ফোন করবেন। ব্লকের নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে জানাবেন। আমি আপনার পরিচয় গোপন রাখব। আমি প্রতি মাসে এখানে আসব।’
২১ জুলাই প্রসঙ্গেও এ দিনের সভা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিশেষ বার্তা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ জুলাই সমাবেশের আগে প্রত্যেকে নিজেদের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসতে বলেছেন। অভিষেক বলেছেন, ‘২১ জুলাই উপলক্ষ্যে যাঁরা সমাবেশে আসবেন, তাঁরা প্রত্যেকে সঙ্গে করে নিজেদের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে আসবেন। দেখা হবে কে কত বুথে গিয়েছেন। হয় ঠিকাদারি, নয় তৃণমূল। একসঙ্গে দু’টো কাজ করা যাবে না। কোনও দাদা, দিদি ধরে লাভ হবে না। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের একটাই নিয়ম। নেত্রী একজনই, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দাদা-দিদির ছত্রছায়ায় থেকে যা ইচ্ছে করা যাবে না। দাদা-দিদি ধরে নির্বাচনের টিকিট মিলবে না। প্রত্যেক সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে স্থানীয় নেতৃত্বকে।’
এদিনের সভা থেকে বিজেপিকেও এক হাত নিয়েছেন অভিষেক। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, ‘আগে গ্যাসের দাম ছিল ৪০০ টাকা, তা এখন বেড়ে হয়েছে ১১০০ টাকা। সরষের তেলের দাম আগে ছিল ১০০ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২০০ টাকা। এসব বিজেপিকে ভোট দেওয়ার এফেক্ট। রাজ্যকে কেন্দ্র তার প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। আটকে রেখেছে ১০০ দিনের এক হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের হাজার হাজার কোটি টাকা রাজ্য পাচ্ছে না। বিজেপি নেতারা রাজ্যের সমস্ত প্রাপ্য টাকা আটকে দিচ্ছে।’
গত বিধানসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের ফলাফল ভালো হয়নি। তার জন্য দলীয় কর্মীদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন তিনি। অভিষেক বলেছেন, ‘জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের নির্বাচনী ফল ভাল হয়নি। অনেক মানুষ অভিমানে মুখ ফিরিয়েছে তৃণমূলের থেকে। গণতন্ত্রে গণদেবতা মানুষই। মানুষের রায় শিরোধার্য। মানুষের পাশে থাকবে তৃণমূল। যে কোনও দরকারেই পাশে পাওয়া যাবে। তৃণমূল বিজেপির মতো নির্বাচনের পাখি নয়, যে শুধু ভোটের সময় আসবে। আমি সভায় আসার আগে ভেবেছিলাম মানুষ তেড়ে আসবে। তবে সেই ভাবনা ভুল। এখানের মানুষ আপন করে নিয়েছেন। আমি যদি পারি, তাহলে আপনারা ( স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব) পারবেন না কেন? পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, তৃণমূল সকলের পাশে থাকবে। রাজ্য সরকার কোনও বিশেষ দলের নয়, সরকার সকলের। মানুষের কাছে মাথা নত করে যান। মানুষের জন্য কাজ করুন।’