৯ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলেন কেতুগ্রামের রেণু খাতুন
Connect with us

বাংলার খবর

৯ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলেন কেতুগ্রামের রেণু খাতুন

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ৯ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলেন রেণু খাতুন। সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পাওয়ায় গত আট দিন আগে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের গৃহবধূ রেণু খাতুনের কব্জি থেকে ডান হাত কেটে নিয়েছিলেন তাঁর স্বামী শের মহম্মদ। তারপর থেকেই দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর কাটা যাওয়া হাত আর জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। তাই একহাত নিয়েই সোমবার কেতুগ্রামে নিজের বাপের বাড়িতে ফিরলে রেণু। হাসপাতালে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রেণু এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আর সংক্রমনের কোনও ভয় নেই। তাঁর ডান হাতের জোর আগের মতোই রয়েছে।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর রেণু বলেছেন, ‘এতদিন পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। সুস্থ হয়েই আমি চাকরিতে যোগ দেবো। এবং কৃত্রিম হাত লাগাব। তবে মাস তিনেক পরে। আমার মতো যারা এই ভাবে নির্যাতিতা, ভবিষ্যতে তাদের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা আছে। তাদের জন্যই এবার লড়াই করতে চাই।’ হাসপাতালে বিছানাতে শুয়েই রেণু জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরবেন না। এবং যাঁরা আজ তাঁর এই দশা করেছেন, তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় অভিযুক্ত রেণুর স্বামী শের মহম্মদ, তাঁর শ্বশুর ও শ্বাশুড়ী এবং দুই সুপারি কিলারকে গ্রেফতার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।

ইতিমধ্যেই, রেণুর পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ সফরে থেকে ফিরেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এক হাতে যে কাজ করা সক্ষম, রেণুকে পূর্ব বর্ধমানের সরকারি হাসপাতালে সেইরকম চাকরিতেই নিয়োগ করা হবে। এমনকি, রেণুর কৃত্রিম হাত লাগানোর আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বেসরকারি হাসপাতালে কেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে রেণুর চিকিৎসা হচ্ছে না, সেই ব্যাপারে খতিয়ে দেখার জন্য মুখ্যসচিবকেও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন রেণু। তিনি বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকার আমার পাশে দাঁড়ানোয় আমি খুবই খুশি। আমি তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ ছাড়াও আরও অনেকেই আমাকে সাহায্য করেছেন। তাঁদের সকলকে আমার ধন্যবাদ জানানোর কোনও ভাষা নেই।’

Advertisement

উল্লেখ্য, গত ৪ জুন, শনিবার ঘুমন্ত অবস্থায় রেণুর কব্জি থেকে ডান হাত কেটে বাদ দেন তাঁর স্বামী শের মহম্মদ। স্ত্রী সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পাওয়ায় তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারেন, এই আশঙ্কা থেকেই টাকার বিনিময়ে দুই সুপারি কিলারকে ভাড়া করে বন্ধু সাজিয়ে বাড়িতে নিয়ে এসে রেণুর হাত কাটার ব্যবস্থা করেন তাঁর স্বামী। ঘটনার তিন দিন পর, মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে রেণুর শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর, ওই দিন সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এক জায়গা থেকে শের মহম্মদকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ভাড়াটে ওই দুই সুপারি কিলারকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকেই দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন রেণু।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.