বাংলার খবর
পুকুর খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো প্রাচীন মূর্তি, হইচই দাঁতনে
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একের পর এক উদ্ধার ইতিহাসে সমৃদ্ধ পুরাকীর্তির নিদর্শন, ভারতের ইতিহাসের মানচিত্রে নতুনভাবে ঠাঁই হতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের।
এবার উদ্ধার হল পুরাকীর্তির নিদর্শন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতনে। পুকুর খননের সময় মিলল ভগ্ন নারীমূর্তি। এর আগেও বেশ কয়েকটি নিদর্শন উদ্ধার হয়েছে দাঁতন এবং সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকে। এরফলে নতুন করে একটি প্রশ্ন উঠেই আসছে, তাহলে কি ভারতবর্ষের ইতিহাসের মানচিত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নতুন করে নাম সংযোজন করতে চলেছে?
প্রসঙ্গত,বাংলা ওড়িশা সীমান্তবর্তী এলাকা দাঁতনের অগাধ ইতিহাস লুকিয়ে আছে ধরিত্রীর বুকে।মাটির নিচেই আছে অজানা নানা কাহিনি।সংস্কৃতির ধারক ও বাহক যেমন দাঁতন, তেমনি প্রাচীন দণ্ডভুক্তি এই গ্রামে আছে নানান প্রাচীন কথা, ইতিহাসের একাধিক ছাপ।
কখনও বৌদ্ধ মহাবিহার, আবার কখনও রেবন্তের মূর্তি পাওয়া গিয়েছে মাটির নীচ থেকে।অর্থাৎ প্রাচীন এই দণ্ডভুক্তি গ্রামটি ইতিহাস প্রসিদ্ধ। এখনও হয়তো মাটির নিচে খনন করলে পাওয়া যাবে নানা অজানা কাহিনী।
রবিবারই এমন একটি ভগ্ন নারীমূর্তি পাওয়া গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের মনোহরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাকরাজিত গ্রামে।কাকরাজিত গ্রামে মহাপ্রভু মন্দির সংলগ্ন কুন্ডুপুকুর খনন করতে গিয়ে একশো দিনের শ্রমিকরা পান ভগ্ন একটি নারীমূর্তির।
আরও পড়ুন: মেয়ের শ্বশুর-বাড়ির বিবাদ মেটাতে এসে প্রতিবেশীর হাতে খুন বাবা
গবেষকদের একাংশ মনে করছেন এটি কোনও দেবীর মূর্তি। গবেষক অতনু নন্দন মাইতি বলেন, “দাঁতন জুড়ে রয়েছে নানা ইতিহাসের নিদর্শন। তবে মোগলমারি গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে এই গ্রামে পাওয়া মূর্তি সম্ভবত কোনও দেবীর মূর্তি। কারণ, ভগ্নপ্রায় এই মূর্তিটি ভারী অলংকারে ভূষিতা। মাথায় রয়েছে একটি মুকুটও। স্বাভাবিকভাবেই এটি কোনও দেবীর মূর্তি হতে পারে।”
ইতিহাসের এই সুন্দর নিদর্শনটি সময়কাল এবং কীসের মূর্তি তা গবেষণার বিষয়। গবেষকদের একাংশ মনে করছেন এটি পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ শতকের তৈরী। তবে গঠনশৈলী দেখে একাংশ মনে করছেন এটি সপ্তম কিংবা অষ্টম শতকে নির্মিত।
বিভিন্ন সময়ে এই গ্রাম থেকে পাওয়া বিষ্ণুমূর্তি সহ বিভিন্ন মূর্তি গাছের তলায় এলাকাবাসীরা সযত্নে রেখেছেন এবং তাঁকে নিত্যদিন পুজাও করেন। ফলত রবিবার পুকুরের খননকাজ যে পাওয়া এই মূর্তিটিও স্থান হতে পারে কোনও গাছের নিচে।
আরও পড়ুন: “সুতপার মা-বাবা মানসিক হেনস্থা করেছে, তাই খুন করেছি” স্পষ্ট জবাব সুশান্তের
দাঁতনের ইতিহাস ঘাটলে কিংবা মাটির নীচ খুঁড়লে করলে পাওয়া যেতে পারে আরও নানা পুরোনো নিদর্শন। নিদেনপক্ষে ইতিহাসটুকু। তবে অচিরেই পাওয়া এই সমস্ত ঐতিহাসিক নিদর্শনকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করুক প্রশাসন দাবি দাঁতনবাসীর।