বাংলার খবর
বিহারে কাজ করতে গিয়ে খুন হলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের পরিযায়ী শ্রমিক

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: অভাবের সংসারের হাল ধরতে ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরা হল না এক পরিযায়ী শ্রমিকের। বিহারে কাজ করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিক। মৃত্যুর খবর বাড়িতে আসতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার।
মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয় বিধায়ক তাজমুল হোসেন। দিয়েছেন সাহায্যের আশ্বাসও। সেই সঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্য বিহারের আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও সরব হন তিনি। যদিও পাল্টা রাজ্যে কর্মসংস্থান নেই বলেই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুরের কাওয়ামারী গ্রামের শামীম আক্তার। এলাকায় জামাল নামেই পরিচিত। বাড়িতে তিনি ছাড়াও তিন ভাই এবং এক বোন। রয়েছে স্ত্রী, কন্যা এবং বৃদ্ধা মা। অভাবের সংসার। হরিশ্চন্দ্রপুরে সামান্য ড্রাইভারির কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউনে তেমন ভাবে ভাড়া না পাওয়ায় বিহারের পাটনার কারমালি চক বাই পাস আস্তানা এলাকায় গিয়েছিলেন পাইপ পুশিঙের কাজ করতে। তাঁর সঙ্গে আশেপাশের এলাকার আরও কয়েকজন গিয়েছিলেন। কাজ চলছিল এবং বাড়ির সঙ্গেও কথা হতো। তিনদিন পরই তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল।
কিন্তু আর ফেরা হল না। বিপত্তি ঘটল সোমবার রাতে। কাজ থেকে ফেরার সময় কেউ বা কারা শামীমকে গুলি করে বলে অভিযোগ। জানা যায়, তাঁর শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। এই খবর বাড়িতে আসতেই শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে গোটা পরিবার। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শামীম অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিলেন। কোন কারণ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কারও ঝামেলা ছিল না। তাই কারা তাঁকে খুন করল বুঝতে পারছে না পরিবারের লোকজন। তবে যারাই করুক, তাদের যাতে কঠোরতম শাস্তি হয় সেই দাবি জানাচ্ছে শামীমের মা, ভাই, স্ত্রী-সকলেই।
এই মুহূর্তে অভাবের সংসার চলবে কী করে, তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। খবর পেতেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসেন এলাকার বিধায়ক তাজমুল হোসেন এবং মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান। আর্থিক দিক থেকে শুরু করে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন বিধায়ক তাজমুল। সেইসঙ্গে তিনি জানান, দোষীদের শাস্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও বলবেন তিনি। বিজেপি শাসিত রাজ্যে আইনের শাসন নেই বলেও সরব হযন বিধায়ক। এই অসহায় দরিদ্র পরিবারের আবাস যোজনার ঘর মেলেনি। সেই প্রসঙ্গেও বিধায়ক আশ্বাস দেন, যাতে তাঁরা পরবর্তীতে ঘর পান, সেই ব্যাপারে তিনি দেখবেন।
মৃতের ভাই মেহবুব আলম বলেছেন, ‘দাদা খুব ভালো এবং শান্ত স্বভাবের। কারও সঙ্গে ঝামেলা ছিল না। সোমবার ফোন আসে, কাজ থেকে ফেরার সময় দাদার ছিনতাই হয়েছে এবং তাকে মারধর করা হয়েছে। খবর শুনে আমরা গাড়ি নিয়ে রওনা দিই। তারপরই ফোন আসে তাকে গুলি করে মারা হয়েছে। যারা করেছে তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ শামীমের স্ত্রী শাহানারা খাতুন বলেছেন, ‘১৮ দিন আগে আমার স্বামী কাজ করতে গিয়েছিল। তিনদিন পরে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার মাঝে এরকম ঘটনা ঘটে গেল। কীভাবে কী হল বুঝতে পারছি না।’