বাংলার খবর
ভবানীপুরে জোড়া খুনে গ্রেফতার ৩, আর্থিক লেনদেনে ঝামেলার জেরে খুন জানালেন সিপি

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ভবানীপুরে গুজরাতি দম্পতি অশোক শাহু ও রশ্মিতা শাহুর খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। বুধবার রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর দু’জনকে এবং বৃহস্পতিবার সকালে আরও একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত তিন ব্যক্তির নাম যতীন মেহতা, রত্নাকর নাথ এবং সুবোধ সিং। তিনজনই হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত আছেন বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
বৃহস্পতিবার লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, শাহু পরিবারের এক আত্মীয় খুন হওয়া অশোক শাহুর কাছ থেকে ২০১৯ সালে এক লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলার জেরেই ওই গুজরাটি দম্পতি খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিপি। ধার দেওয়া টাকা বারবার চেয়ে চাপ দিচ্ছিলেন অশোক শাহু। যিনি টাকা ধার নিয়ে ছিলেন তিনি সম্প্রতি করোনায় মারা যান। সেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর ভাইয়ের। কিন্তু তিনি সেই টাকা শোধ দিচ্ছিলেন না। ধার নেওয়া টাকা যাতে পরিশোধ করতে না হয়, সেই কারণেই ওই গুজরাতি দম্পতিকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সেই আত্মীয়-সহ ৪ জন ব্যক্তি ভবানীপুরে ওই গুজরাতি দম্পতির বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আর্থিক লেনদেন নিয়ে বাকবিতন্ডা হওয়ায় ওই দম্পতিকে খুন করা হয়। তবে পূর্ব পরিকল্পনা করেই ওই দম্পতি খুন করা হয়েছে বলেই বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। সম্ভবত ওই আত্মীয়ই বাকি আততায়ীদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। এদের মধ্যেই এক জন ছুরি চালিয়েছিলেন মৃতদের উপর। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তবে মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা বলে জানিয়েছেন সিপি। পুলিশ জানিয়েছে, এক আত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ এবং সিসিটিভির সূত্র ধরেই ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিপি আরও জানান, ঘটনায় নিখোঁজ যাওয়া আরও একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। গুজরতি দম্পতির ওপর যে ছুরি চালিয়ে ছিল, যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সেও রয়েছে। এবং গ্রেফতার হওয়ার সুবোধ সিংকে সম্প্রতি অন্য একটি মামলাতেও গ্রেফতার করা হয়। শুধুমাত্র লুটপাটের জন্য এই খুন করা হয়নি। প্রতিহিংসার জেরে শাহু দম্পতি খুন হন হয়েছেন। প্রয়াত দম্পতির উপর মূল অভিযুক্তের অনেক দিনের রাগ ছিল। মূল অভিযুক্ত সহ এই ঘটনায় আরও যারা জড়িত রয়েছেন গ্রেফতারের পর তাদের নামও প্রকাশ্যে আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার সন্ধে ছ’টা নাগাদ ৭৩এ হরিশ মুখার্জি রোডের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ওই গুজরাতি দম্পতির দেহ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ঘটা সেই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে শহরে। সেদিন রাত থেকেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশ। এরপর বুধবার উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরেই ওই গুজরাতি দম্পতির বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি দ্রুত আততায়ীদের গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মূল অভিযুক্তও খুব দ্রুতই ধরা পড়বে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।