বাংলার খবর
১০৭ বছরের অমলাদেবী আজও সব্জি বিক্রি করে সংসারে সাহায্য করেন!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বয়স বেশি নয়, ওই মোটামুটি ধরুন এক শতাব্দী আগে তার জন্ম হয়েছে! কিন্তু এখনও তিনি সংসারের পাশে দাঁড়াতে চান। বাঁকুড়ার অমলাদেবী আজও সব্জি বিক্রি করে চলেছেন হাসি মুখে। এমন নয় যে তিনি এই কাজ না করলে তাঁর সংসার চলবে না।
আসলে তিনি ভালোবাসেন বলেই করেন এই কাজ। এই বয়স অবধি অনেকেই পৌঁছতে পারে না ,আর পারলেও কর্মক্ষমতা সে ভাবে থাকে না। কিন্তু অমলাদেবী এক ব্যতিক্রমী চরিত্র। খুব সকাল সকাল তিনি ঘুম থেকে উঠে পড়েন। তারপর ঘরদোর পরিষ্কার করে চলে যান মাঠে। মাঠ থেকে তুলে আনেন শাক, কিছু সব্জি। সেগুলো নিয়ে চলে যান সোজা বাজারে। সেই সমস্ত শাক-সব্জি বিক্রি করে ফিরে আসেন বাড়ি। তারপর স্নান-খাওয়া করে দাওয়াতে একটু রোদ পোহানো আর নয়তো একটু বিশ্রাম। এই হলো অমলাদেবীর রোজনামচা। অমলাদেবীর বাবার বাড়ি নদিয়াতে। যদিও সেই বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল মাত্র ১০ বছর বয়সে। কারণ এই বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। তারপরই বাঁকুড়ায় আসা।
মদাসক্ত স্বামী লিভারের অসুখে অনেক আগে মারা গেছিলেন। তারপর থেকে তাঁকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল। সেই হাল তিনি আজও ছাড়েননি। নিজের কত বয়স সেটাও তাঁর ঠিক মনে নেই। তাঁর ছেলে জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের বয়স ১০৭। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের সেই রকম বড় কোনও শারীরিক সমস্যা নেই। শুধু একটু আধটু ব্যাথা-বেদনা ছাড়া আর তেমন অসুস্থতা নেই। তবে মাঝেমধ্যে তিনি চিনতে পারেন না কাউকে। কিন্তু ছেলেকে তিনি কখনও ভোলেন না। ছেলে আরও বলেন, তাঁর মা ক্লান্তি কী, তা জানেন না। ছেলে আর তাঁর বৌকে নিয়ে অমলাদেবীর এখন সুখের সংসার। কিন্তু নিজের অস্তিত্বকে বাঁচিয়ে রাখতে অমলাদেবী আজও নিজের অভ্যাসে বদল করেননি। প্রতিদিন সকলের সঙ্গে হাসি আর আনন্দ করেই তাঁর জীবন কেটে যাচ্ছে -এই ভাবনাই হয়তো ১০৭ বছরের অমলাদেবীর জীবনীশক্তির মূলমন্ত্র।