বাংলার খবর
বিকাল হলেই ডিজে বাজিয়ে চলছে মদের আসর, মাতালদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একাধিক জায়গায় বিষ মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। এর মধ্যেই মালদহর হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিহার সীমান্তবর্তী কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাঁধ রোডে প্রতিদিন বিকেল হলেই প্রকাশ্যে মদের আসর বসার অভিযোগ উঠল। আর এই মদের দোকানের জন্য মাতালদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসীরা। দলবদ্ধ হয়ে গ্রামবাসীরা গোটা ঘটনার প্রতিবাদ জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হল অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিকেল হলেই প্রতিদিন বিহার থেকে দলে দলে লোক এসে ভিড় জমাচ্ছে কুশিদা এলাকার মদের দোকান গুলোতে। তারমধ্যে সমাজবিরোধীরাও রয়েছে। প্রকাশ্যেই দেদার বিক্রি হচ্ছে মদ। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে মদের আসর। এলাকার মানুষদের দাবি, এই বেশিরভাগ মদের দোকানই বেআইনি। আর বিকেল থেকেই সেই সব মদের দোকানে বসছে মাতালদের আড্ডা। যার ফলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। এমনকি মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা। বারবার প্রতিবাদ করেও কোনও ফল না হওয়ায় গ্রামের মহিলারা দল বেঁধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান।
পুলিশের কাছে তাঁরা দাবি করেন, অবিলম্বে এই বেআইনি মদের দোকান ও ঠেকগুলো বন্ধ করতে হবে। যদি পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই অভিযোগ পাওয়ার পরই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় নবনিযুক্ত আইসি দেওদূত গজমের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী সেখানে গিয়ে সমস্ত বেআইনি মদের দোকানগুলি ভেঙ্গে দেয়। সেই সঙ্গে পুলিশ গ্রামবাসীদের আশ্বস্তও করেছে যে ভবিষ্যতে আর এই ধরনের কোনও বেআইনি মদের দোকান এলাকায় খুলতে দেওয়া হবে না। তার জন্য এলাকায় সিভিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন আইসি।
এলাকার এক মহিলা জানিয়েছেন, ‘প্রতিদিন বিকাল হলেই বিহার থেকে লোকজন এসে আমাদের এলাকায় মদ খায়। তার সঙ্গে ডিজে বাজিয়ে চলে জোর নাচাগানা। সেই সঙ্গে চলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। যার ফলে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনায় প্রচন্ড ক্ষতি হয়। এই মদ্যপদের জ্বালায় এলাকায় টেকাই দায় হয়ে গিয়েছে। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তারা আমাদের কোথায় কর্ণপাতই করেনি। আমরা হাটখোলা ক্যাম্পে গিয়ে অনেকবার অভিযোগ করেছি। লিখিত অভিযোগে জানিয়েছি। পুলিশ রেড করে চলে গেলে তার পরের দিনই আবার খুলে যায় মদের দোকান। এলাকাতেই মদের দোকান থাকায় আমাদের স্বামীরাও সেখানে গিয়ে মদ খেয়ে বাড়িতে এসে অশান্তি করে। স্ত্রীদের মারধর করে। এই সব দেখে আমাদের ছেলে-মেয়েরাও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’
আরেক মহিলা অভিযোগ করেছেন, ‘হাটখোলা পুলিশ ক্যাম্পে বারবার জানিও কোনও সুরাহা হয়নি। ওই মদের ঠেকগুলোর পাশেই দুটো স্কুল রয়েছে। মাতালদের অত্যাচারে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে। মাতালদের ভয়ে ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছে। অভিযোগ করলে পুলিশ গিয়ে মাতালদের আটক করে নিয়ে আসে। আবার ছাড়া পেলেই যে কে সেই।’